চুক্তির পর ফের তালেবানের ওপর বিমান হামলা যুক্তরাষ্ট্রের
কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ দিনের মাথায় ফের দলটির ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। ৪ মার্চ বুধবার দেশটির দক্ষিণ হেলমান্দ প্রদেশে এ হামলা চালানো হয়। আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন বাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এর আগে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানান আফগানিস্তানের মার্কিন সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এরপরই সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা শুরুর ঘোষণা দেয় তালেবান। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় দলটি। কুন্দুজে তিনটি সেনা চৌকিতে হামলায় অন্তত ২০ সেনা ও পুলিশ নিহত হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীকে রক্ষায় বুধবার তালেবানের ওপর বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। টানা ১১ দিন বিরতির পর দলটির ওপর এ ধরনের হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র।
টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ইউএস ফোর্সেস-আফগানিস্তানের মুখপাত্র সনি লেগেট। তিনি বলেন, হেলমান্দ প্রদেশে আফগান বাহিনীর একটি চৌকিতে হামলাকারী তালেবান যোদ্ধাদের ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে। অবশ্য এটি প্রতিরক্ষামূলক হামলা। অপ্রয়োজনীয় সংঘাত এড়ানো ও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমরা তাদের তাগিদ দিয়েছি।
বুধবার মার্কিন বাহিনীর এ হামলার আগের দিন মঙ্গলবার তালেবানের শীর্ষস্থানীয় নেতা মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদারের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিজেই ওই ফোনালাপের তথ্য জানান। তালেবান সূত্রে জানা গেছে, দুই নেতার মধ্যে প্রায় আধঘণ্টা কথা হয়েছে। ফোনালাপে তালেবান নেতাকে ‘একজন শক্ত মানুষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের তিনি জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
কোনও কোনও বিশ্লেষক ইতোমধ্যে সতর্ক করেছেন এই বলে যে, এখন পর্যন্ত তালেবানকে দেখে মনে হচ্ছে না তারা কোনও ছাড় দেবে। চুক্তিস্বাক্ষরের বিষয়টিকে তারা নিজেদের বিজয় হিসেবেই দেখছে। যদিও তালেবান যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বৈধতা চায়, সেটা ইতোমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে। চুক্তির সময় কাতারের রাজধানী দোহায় যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে, তাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। ওই চুক্তির তিন দিনের মাথায় ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ দৃশ্যত দলটির জন্য অর্জনই বটে। তবে তালেবান বন্দিদের মুক্তি এবং দেশটিতে নতুন করে সহিংসতা থামানো দৃশ্যত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।