রাফাল মোতায়েনের পরও ভারতের বিরুদ্ধে কারিগরিভাবে এগিয়ে থাকবে পাকিস্তান
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের পাশে বসে দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান রাকেশ কুমার ভাদুরিয়া দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন যে দেশের প্রতিরক্ষা প্রয়োজন মেটানোর জন্য রাফাল জঙ্গি বিমান অপর্যাপ্ত।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাবেক অফিসার কে ঠাকুর স্পুটনিককে বলেন যে এখন ভারতের অস্ত্রাগারে থাকা বিমানগুলোর মধ্যে অবশ্যই রাফালই সেরা। কিন্তু পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মতো দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ বাহিনী ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ)-র শ্রেষ্ঠত্ব অবসান করে দিতে পারে তাদের জেএফ-১৭ জঙ্গি বিমানের নতুন সংস্করণে দূর পাল্লার চীনা পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে।
ঠাকুর বলেন, রাফাল বিমান সংগ্রহ করার মাধ্যমে ভারতীয় বিমান বাহিনী যে কারিগরি সুবিধা পেয়েছিল সেটি ক্ষণস্থায়ী হতে পারে। কারণ এটি অনেকটাই নির্ভরশীল হবে রাফালের অস্ত্র সিস্টেম ও সেন্সরের ওপর।
দুই দশক আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমান বাহিনী অস্ত্র সিস্টেম ও সেন্সরের চেয়ে প্লার্টফর্মের ওপরই বেশি নির্ভরশীল ছিল। ভারতীয় বিমান বাহিনী লেসার-গাইডেড বোমা ও টার্গেটিং পড কিনে তার জরুরি প্রয়োজন অনেকটাই মিটিয়েছে।
জেএফ-১৭ বিমানের শক্তি বৃদ্ধি
পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জেএফ-১৭ বিমানে বড় ধরনের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এটি জে-২০ স্টিলথ জঙ্গিবিমানের সমমানের হচ্ছে বলে চীনা পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস চলতি বছরের প্রথম দিকে জানিয়েছিল।
চীনা পত্রিকাটি থেকে জানা যাচ্ছে যে আধুনিকায়ন করা জেএফ-১৭ জঙ্গি বিমানে ইনফ্রারেড সার্চ ও ট্র্যাক সিস্টেম থাকবে।
জেএফ-১৭ জঙ্গি বিমানে পিএল-১৫ বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে। এটি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন বিমান বাহিনী এই অস্ত্র নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।
ওই সময়ের মার্কিন বিমান বাহিনীর কমব্যাট কমান্ডের প্রধান হারবার্ট জে চার্লি ফ্লাইট গ্লোবালকে বলেছিলেন যে চীনা পিএল-১৫ এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের কোনোই তুলনা হয় না।
বালাকোট থেকে শিক্ষা
২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, বালাকোটে কথিত সন্ত্রাসী ক্যাম্পে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলার এক দিন পর, পাকিস্তান বিমান বাহিনী দূর পাল্লার আমরাম ও অপেক্ষাকৃত সহায়ক সেন্সর সক্ষমতা দিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীকে চমকে দেয়।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ঠাকুর বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী অস্ত্র সিস্টেম ও সেন্সর হালনাগাদ করার বদলে প্লাটফর্ম কেনার দিকে মনোযোগ দিয়ে শক্তির বিচারে পিছিয়ে পড়েছে। পর্যাপ্ত সামরিক দূরদর্শিতা থাকলে ভারতীয় বিমান বাহিনী তার সু-৩০এমকেআইকে রাশিয়া থেকে দূর পাল্লার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত করতে পারত।
বালাকোট হামলার কয়েক দিন পর ভারতীয় বিমান বাহিনী আর-২৭, আর-৭৩-এর মতো রাশিয়ার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের অর্ডার দেয়।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর কাছে ২০২০ সালের মে মাসে রাফাল বিমান হস্তান্তর করা শুরু হবে।