এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনলেন বহিষ্কৃত নেত্রী ফাতেমা আনোয়ার
যুব মহিলা লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর নির্বাচনে স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ার। সোমবার (২০ মে) সন্ধ্যায় যশোর প্রেস ক্লাবে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা আনোয়ার দাবি করেন, এমপি কাজী নাবিল আহমেদ তার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বিপুলকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে প্রভাব বিস্তার করছেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ফাতেমা আনোয়ার একই অভিযোগে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করেছেন।
আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফাতেমা আনোয়ার ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ১৮ মে সংগঠনবিরোধী ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আনোয়ারকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে ফাতেমা আনোয়ার বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষে কোনো চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকবে না মর্মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি দলীয়ভাবে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এই নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও যশোর সদর (যশোর-৩) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ একটি প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তিনি সমর্থন দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলকে। বিপুলকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ উপজেলার দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিপুলের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেন। তার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করলে দলীয় পদ হারানোসহ বিভিন্ন সরকারি আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে বলেও নাবিল আহমেদ জানিয়েছেন।
ফাতেমা আনোয়ার লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, সাংসদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বিপুল তার পক্ষের কিশোর গ্যাং ও তাদের গডফাদারদের দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় পেশী শক্তি প্রদর্শন করে আসছে। বিশেষ করে জেলা শ্রমিক লীগনেতা সেলিম রেজা পান্নু ও তার অনুসারীরা বিগত ইউপি নির্বাচনের ন্যায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকায় গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু ও তার অনুসারীরাও একইভাবে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে।
ফাতেমা আনোয়ার জানান, নাবিল আহমেদের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে যদি কাজ না করা হয়, তাহলে চেয়ারম্যান ও তাদের সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। সরকারি আর্থিক সুবিধা (ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা) থেকে বঞ্চিত করবেন। এছাড়াও উপজেলার সকল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের পদ হারানোর ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
এছাড়া নাবিল আহমেদের ঘনিষ্ঠ সুজন সাত্তার স্থানীয় সাংসদের নির্দেশের বাইরে যে সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কাজ করবে তাদের নামের তালিকা তৈরি করছেন। নাবিল আহমেদ বিভিন্ন কর্মসূচি চূড়ান্ত করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার দিন ও সময় চূড়ান্ত করেছেন। যা নির্বাচন আচরণবিধির লঙ্ঘন। এছাড়া এমপির মনোনীত প্রার্থী বিপুল প্রচারণার নামে ঘোড়া প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের হুমকি, মিথ্যা অপপ্রচার ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।