সিএএ আগামী দিন কতটা ফলপ্রসু হবে সে নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজেপির অন্দরে
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকরের প্রায় দেড় মাস পেরিয়েছে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে নাগরিকত্ব সংশোধনের একটিও আবেদন জমা পড়েনি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সিএএ আগামী দিন কতটা ফলপ্রসু হবে সে নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে গেরুয়া শিবিরে অর্থাৎ বিজেপির অন্দরে।
গত ১১ মার্চ সিএএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। আদৌ এই আইন তাঁদের ভোটবাক্স ভরাতে সাহায্য করবে কি না দেড় মাস পর সেই ধন্দে পড়েছে বিজেপি নেতৃবৃন্দ।
নির্বাচনের মুখে সিএ লাগু হলেও দেড় মাস পর দেশের কোনো প্রান্ত থেকে একটিও আবেদন জমা পড়েনি বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি এক আরটিআই কর্মী ‘তথ্য অধিকার আইনে’ জানতে চান—এ পর্যন্ত দেশের কতজন নাগরিকত্বের আবেদন করেছেন? উত্তরে গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে জানান হয়, এখনো পর্যন্ত একজনও আবেদন করেননি। ফলে প্রথম দফার নির্বাচনের পর এই তথ্য সামনে আশায় হতাশ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
গত ১১ই মার্চ সিএএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই উল্লাসে মাতে গেরুয়া শিবির। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও পাঞ্জাব, তামিলনাড়ুর ভোটবাক্সে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করে বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি নেতারা বরাবরই প্রচার করেছে, এই আইন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়। নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। তবে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজ্যে সিএএ লাগু করতে দেবেন না।
চলতি জাতীয় নির্বাচনের প্রচারে তিনি বারবারই বলেছেন, ‘এই আইনের (সিএএ) মাধ্যমে নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি নাগরিকত্ব হারাবেন।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিতেই যে বাংলার মানুষ সমর্থন জানাচ্ছে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য থেকেই স্পষ্ট। সম্প্রতি এক আরটিআই কর্মী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাছে জানতে চান, অনলাইন পোর্টাল মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত কতজন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানিয়েছে। যদি করে থাকেন তাহলে তাঁরা কি নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
জবাবে মন্ত্রণালয়ের তরফে ২৩ এপ্রিল জানান হয়, এখনো পর্যন্ত দেশের কোনো রাজ্য থেকেই একজনও আবেদন করেননি।
তথ্য সামনে আসতেই হতাশ গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্ব। কারণ এই আইন লাগু হওয়ার পর তাঁরা যে আশা করেছিলেন দেশের মানুষ সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন দলের একাংশ। এইভাবে চলতে থাকলে দল ও সরকারের মুখ পুড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। কারণ এই আইন নিয়ে ঢালাও প্রচার চালাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও সরব হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আবেদনেও সাড়া মেলেনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিকত্ব আইন গেরুয়া শিবিরের কাছে হিতে বিপরীত হতে পারে।