সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে ইরান-ইসরাইল?

0

চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরাইলে নজিরবিহিন চালিয়েছে ইরান। ইসরাইলকে লক্ষ্য করে প্রথম বারের মতো ইরানের ভূমি থেকে থেকে ড্রোন আর মিসাইল হামলার পর দুই দেশের মধ্যে এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্বের নজর এখন ইরান-ইসরাইল পরিস্থিতির দিকে। ইরানের হামলার জবাবে ইসরাইলের পদক্ষেপ কী হবে সেটি নিয়েও উদ্বিগ্ন বিশ্ব।

দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু বেঁধে যায় কিনা এ নিয়ে চিন্তিত সবাই। কারণ সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে তুলনা করলে দেখা যায় দুটি দেশই সামরিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী। খবর বিবিসির।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইরান সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে ইসরাইলের তুলনায় তিন ধাপ এগিয়ে আছে।

তবে দুটি দেশই বিশ্বের সামরিক শক্তিধর দেশের শীর্ষ কুড়িটি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে।

সামরিক সক্ষমতায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে র‍্যাংকিংয়ে ইরানের অবস্থান ১৪তম আর ইসরাইলের অবস্থান ১৭তম।

সামরিক শক্তির তুলনা

প্রতিরক্ষা খাতে ইরান ও ইসরাইল দুই দেশই প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। তবে বাৎসরিক সামরিক বাজেটে ইরানের তুলনায় ইসরাইলের ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাজেট হলো ২৪৪০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ইরানের বাজেট ৯৯৫ কোটি ডলার। এই র‍্যাংকিংয়ের ১৪৫ দেশের মধ্যে ইরান ৩৩তম অবস্থানে আর ইসরাইল ১৯ তম অবস্থানে রয়েছে।

নিয়মিত সৈন্য

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার জানাচ্ছে, সৈন্য সংখ্যার হিসেবে ইসরাইলের চেয়ে এগিয়ে আছে ইরান।

ইরানের নিয়মিত সেনা আছে ১১ লাখ ৮০ হাজার যেখানে ইসরাইলের সৈন্য ৬ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ইরানের রিজার্ভ সৈন্য সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ আর ইসরাইলের রিজসার্ভ সেনা আছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার।

যুদ্ধ বিমান

ইরানের মোট সামরিক বিমানের সংখ্যা ৫৫১টি আর ইসরাইলের আছে ৬১২টি।

এর মধ্যে ইরানের যুদ্ধ বিমান আছে ১৮৬টি আর ইসরাইলের যুদ্ধবিমান আছে ২৪১টি।

ইরানের অ্যাটাকিং বিমান সংখ্যা ২৩টি যেখানে ইসরাইলের আছে ৩৯টি।

ইরানের পরিবহণ বিমান আছে ৮৬টি ইসরাইলের আছে ১২টি।

ইরানের প্রশিক্ষণ বিমান ১০২টি আর ইসরাইলের আছে ১৫৫টি।

হেলিকপ্টার

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের হেলিকপ্টার আছে ১২৯টি আর ইসরাইলের ১৪৬টি।

৪৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার নিয়ে ইরানের চেয়ে শক্তিশালী ইসরাইল। ইরানের অ্যাটক হেলিকপ্টারের সংখ্যা ১৩টি।

ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’র তথ্য অনুযায়ী, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের দিক থেকে ইসরাইলের চাইতে এগিয়ে আছে ইরান। ইসরাইলের ট্যাংক আছে ১৩৭০টি আর ইরানের ১৯৯৬টি।

সাঁজোয়া যান আছে ইরানের ৬৫ হাজার ৭৬৫টি আর ইসরাইলের আছে ৪৩ হাজার ৪০৩টি।

এছাড়া আর্টিলারি সক্ষমতায় এগিয়ে ইরান যেখানে তাদের রকেট আর্টিলারি এমএলআরএস এর সংখ্যা ৭৭৫টি এবং সেলফ প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৫৮০টি।

অন্যদিকে ইসরাইলের এ দিক থেকে সেফল প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৬৫০টি এবং এমএলআরএস বা রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ১৫০টি।

নৌ শক্তি

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার বলছে, নৌবাহিনীর শক্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান।

দেশটির ১০১টি যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে যেখানে ৭টি ফ্রিগেট এবং ২১টি টহল জাহাজ আর ইসরাইলের যুদ্ধজাহাজ সংখ্যা ৬৭টি।

এর মধ্যে টহল জাহাজ আছে ৪৫টি এবং ইসরাইলের কোনো ফ্রিগেট নেই। সাবমেরিনের দিক থেকেও ইরান শক্তিশালী। দেশটির সাবমেরিন আছে ১৯টি যেখানে ইসরাইলের সাবমেরিন আছে ৫টি।

পারমাণবিক শক্তি

সুইডেন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শুরুতে বিশ্বের নয়টি দেশের কাছে প্রায় ১২ হাজার ৫১২টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরাইল।

এই তালিকায় ইরানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ছিল না।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার দাবি করেছে যে ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। ইরান দাবি করে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।

এদিকে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেনি যেকোনো দেশের হাতে কতটি এ ধরনের অস্ত্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতার বিষয়টি তারা তাদের রিপোর্টে বিবেচনায় নেয়নি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com