দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আরজি খারিজ, গ্রেপ্তারি বৈধ বললেন আদালত
দিল্লি হাইকোর্ট মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) আমআদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আরজি খারিজ করে দিয়েছেন। তবে হাইকোর্টের রায়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা খারিজ হয়ে যায়নি।
পৃথক কোনও মামলায় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চেই আগামীদিনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করতে পারে। যদিও তাতে কেজরিওয়াল ও আপের অস্বস্তি দূর হচ্ছে না এখনই।
মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের যে মামলার রায় আদালত দিয়েছেন তার সঙ্গে জামিনের আর্জির কোনও সম্পর্ক নেই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আসলে ইডির গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেছিলেন। তার আইনজীবীদের যুক্তি আপ সুপ্রিমোকে গ্রেপ্তার করাটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। নির্বাচনের সময় পরিকল্পনা করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ইডি হেফাজতে নিয়েছিল। কেজরিওয়ালের সেই মৌলিক বক্তব্য খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। যার জেরে ইডি বাড়তি অক্সিজেন পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা ইডির গ্রেপ্তারিকে বৈধ বলেছেন। বিচারপতির বক্তব্য, ইডি আদালতে যে নথিপত্র পেশ করেছে তাতে আপ প্রধানের গ্রেপ্তারিকে বেআইনি বলার সুযোগ নেই। মদকাণ্ডে কেজরিওয়ালের যুক্ত থাকার উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ ইডি পেশ করেছে।
যদিও কেজরিওয়ালের আইনজীবীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি ইডি। অথচ মামলা করা হয়েছে বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের মামলা খারিজ হওয়ায় রাজনৈতিকভাবে সুবিধা পেয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কারণ মোদি প্রতিটি সভায় দুর্নীতির ইস্যুতে বিরোধীদের আক্রমণ করে বলছেন ইডি-সিবিআইকে বিজেপি নিয়ন্ত্রণ করে না। সংস্থাগুলো আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে। ওদের কাজের মূল্যায়ন আদালতই করছে। মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের মামলার আদালতের রায়ে আপাতত মোদির এ বক্তব্যই মান্যতা পেয়ে গেল।
তবে জানা যায়, আপ এরপর সুপ্রিমকোর্টে দ্বারস্থ হবেন। সেখানেও তিনি গ্রেপ্তারি অবৈধ দাবি করে মামলা করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ রাতে আফগারি দুর্নীতি (মদকাণ্ড) মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার আগে মদকাণ্ডে জেরা করার জন্য নয় বার কেজরিওয়ালকে নোটিশ পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু কেজরিওয়াল রাজনৈতিক জেরা বলে বারবারই উপেক্ষা করেছিলেন। হাজিরা দেননি। তিনি আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ২১ মার্চ আর ইডিকে আর থামানো যায়নি। ওদিন গ্রেপ্তারির বিষয় দিল্লি হাইকোর্ট আপ প্রধানকে কোনও রক্ষাকবচ দিতে রাজি হয়নি। আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। গ্রেপ্তার করা হয় দিল্লি মুখ্যমন্ত্রীকে।