কেজরিওয়ালের মুক্তির দাবিতে ভারতজুড়ে ‘সামুহিক উপবাস’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুক্তির দাবিতে ভারতজুড়ে ‘‘সামুহিক উপবাস’’ বা গণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমবারের মতো রোববার দেশে ও বিদেশে এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
আম আদমি পার্টির নেতা গোপাল রাই বলেছেন, ভারতজুড়ে এবং বিদেশেও দলের ‘‘সামুহিক উপবাসে’’ অংশ নিচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সমর্থকরা। রোববার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই গণ অনশন চলবে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, আপের সকল বিধায়ক ও পদাধিকারীরা দিনব্যাপী অনশনের জন্য যন্তর মন্তরে জড়ো হয়েছেন। প্রতিবাদস্থলের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সড়কে ব্যাপক ব্যারিকেড বসানোর কারণে মধ্য-দিল্লির কিছু অংশে যানজট দেখা দিতে পারে।
এর আগে, গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল আম আদমি পার্টি। ওই সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আম আদমি পার্টির কিছু নেতা ও কর্মীকে আটকের পর টেনে-হেঁচড়ে গাড়িতে তুলে দিল্লির বিভিন্ন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে, কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে আম আদমি পার্টিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। আপের মন্ত্রী অতীশি ও সৌরভ ভরদ্বাজ বলেছেন, কারাগার থেকেই বিভিন্ন ধরনের আদেশ জারি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লির বাসিন্দাদের কল্যাণের জন্য কারাগারে থেকেও চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন এই দুই আপ নেতা।
কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করায় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জোট ‘ইনডিয়ায়’ ব্যাপক ঐক্য দেখা দিয়েছে। বিরোধীদের এই জোট শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে গত রোববার দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিশাল সমাবেশ করেছে। ওই সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে বিজেপি বিরোধীদের ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করা হয়।
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে গত ২১ মার্চ দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মদ নীতি কেলেঙ্কারির মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত ২৮ মার্চ পর্যন্ত তার রিমান্ড মঞ্জুর করে ইডি হেফাজতে পাঠিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার দিল্লির একটি আদালত তার রিমান্ডের মেয়াদ আরেক দফায় বৃদ্ধি করেছে।
আম আদমি পার্টি বলছে, মামলাটি বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ও তার রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের কাজ করছে।
সূত্র: এনডিটিভি, এএনআই।