জানাজার আগে কিংবা পরে লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে জিকির করা যাবে কি?
জানাজার আগে কিংবা পরে লাশ বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে জিকির করা যাবে কি? অনেক অঞ্চলে দেখা যায়, জানাজার খাটিয়া বহন করার সময় লোকজন আগে-পিছে উচ্চস্বরে কালিমার (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) জিকির করে। আবার কেউ কেউ (মিনহা খালাক্বনা কুম … তারাতান উখরা) উচ্চস্বরে পড়তে থাকে। এটা কি সঠিক? এ বিষয়ে ইসলামের দিকনির্দেশনা কী?
না, উচ্চস্বরে জিকির করা যাবে না। উচ্চস্বরে জিকির করা মাকরূহ। তবে জানাজার পেছনে চলার সময় রয়েছে বিশেষ করণীয়। আর তাহলো পরকালের চিন্তা-ফিকির করা। এ ব্যাপারে ইসলামের দিকনির্দেশনা হলো-
১. জানাজার সামনে-পেছনে জিকির
জানাজার পেছনে চলার সময় করণীয় হলো- ‘আখেরাতের ফিকিরে মগ্ন থাকা। এ সময়ে উচ্চস্বরে জিকির করা মাকরূহ। একান্ত জিকির করতে চাইলে তা হবে নিম্নস্বরে।’ (বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬) প্রমাণ হিসেবে হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
لا تُتبَعُ الجِنازةُ بصَوْتٍ ولا نارٍ، ولا يُمْشى بَيْنَ يَدَيها
জানাজার পেছনে যেন (উচ্চ) শব্দ না করা হয়, আগুন না নেওয়া হয় এবং জানাজার আগে আগেও যেন চলা না হয়।’ (আবু দাউদ ৩১৬৩)
হজরত ইবনু জুরাইজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
أَنّ النّبِيّ ﷺ كَانَ إِذَا تَبِعَ الْجِنَازَةَ أَكْثَرَ السّكُاتَ، وَأَكْثَرَ حَدِيثَ نَفْسِهِ
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন জানাজার পেছনে চলতেন তখন অধিক চুপ থাকতেন এবং (আখেরাতের) চিন্তায় খুব মগ্ন থাকতেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৬২৮২, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১১৩১৫)
২. জানাজার সামনে পেছনে চলার সময় ‘মিনহা খালাক্বনা কুম পড়া
জানাজার সময় মিনহা খালাক্বনা কুম পড়া, এটি জানাজার পেছনে চলার সময় নয়; বরং লাশ কবরে রাখার সময় পড়া মুস্তাহাব। কেননা, হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু উমামা দিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কন্যা উম্মু কুলছুমকে যখন কবরে রাখা হয়, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন-
مِنۡهَا خَلَقۡنٰکُمۡ وَ فِیۡهَا نُعِیۡدُکُمۡ وَ مِنۡهَا نُخۡرِجُکُمۡ تَارَۃً اُخۡرٰی
‘মিনহা খালাক্বনা কুম ওয়া ফিহা নুয়িদুকুম ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা।’
অর্থাৎ ‘মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, মাটিতেই আমি তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেব এবং মাটি থেকেই তোমাদেরকে পুনরায় বের করে আনবো।’ (মুসনাদ আহমাদ ২২১৮৭)