প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ পড়া জরুরি-
প্রতিটি মুসলিমের কাছে জুমার দিন ও নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। মহাগ্রন্থ কোরআনুল কারিম ও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী থেকে জুমার ফজিলত ওঠে এসেছে। ফলে জুমার দিনের রয়েছে আলাদা মর্যাদা।
জুমার দিনের নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য বিশেষ ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ দান করেন। এ নেয়ামত ও অনুগ্রহে বান্দার মর্যাদা অনেক বেড়ে যায়। এ কারণে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ পড়া জরুরি।
তাই ইচ্ছাকৃতভাবে অলসতাবশত জুমার নামাজ থেকে বিরত থাকা মারাত্মক অপরাধ। তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রয়েছে মারাত্মক শাস্তির ঘোষণা। জুমআর নামাজ আদায়ের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখিয়ে শুধু কাজ-কর্মে যারা নিজেদের ব্যস্ত রাখে, আল্লাহ তাআলা সেসব বান্দার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকান না।
জুমার দিনের ফজিলত অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা এ দিনে জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন। এই দিনেই হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামকে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলেই দিনটাকে ইয়াওমুল জুমা বা জুমার দিন বলা হয়।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা কোনো কারণ ছাড়াই ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
ভাবনা বিষয় হলো, যে ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহ তাআলা মোহর মেরে দেন, তার অন্তরে হেদায়েতের নূর প্রবেশ করার আর কোনো সুযোগ থাকে না। আর যে ব্যক্তি হেদায়েতের নূর থেকে বঞ্চিত সে ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
অন্য এক হাদিসে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করলো। (মুসলিম)।’
হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, ইচ্ছাকৃত জমা পরিত্যাগ করলে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে পুরোপুরি গোমরাহ করে দেন। হেদায়েত থেকে বঞ্চিত করেন। (নাউজুবিল্লাহ)
তবে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪শ্রেণির মানুষের জন্য জুমার নামাজকে শিথিল করেছেন। হাদিসের বর্ণনায় তাদের কথা এভাবে ওঠে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ছাড়া জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। চার শ্রেণির লোক হলো-
১. ক্রীতদাস,
২. স্ত্রীলোক,
৩. অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক,
৪. মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)
আল্লাহর কাছে জুমার গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়ার সব কাজ রেখে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করে ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। জুমার ফজিলত, বরকত ও নেয়ামত পেয়ে ধন্য হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।