আল্লাহ বান্দার ইসতেগফারে রেখেছেন অনেক উপকার ও ফজিলত, কী সেসব ফজিলত?
ইসতেগফার হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। সব সময় আল্লাহর কাছে ক্ষমার মানসিকতা পোষণ করা। যদিও ইসতেগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা কিন্তু আল্লাহ তাআলা বান্দার ইসতেগফারে রেখেছেন অনেক উপকার ও ফজিলত। কী সেসব ফজিলত?
ইসতেগফার নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি প্রিয় আমল। তিনি সব সময় নামাজের সালাম ফেরানোর পর ইসতেগফার পড়তেন। হাদিসে পাকে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নামাজের সালাম ফেরাতেন, তখন সর্ব প্রথম যে শব্দ তাঁর পবিত্র জবান থেকে বেরত হতো, তাহলো- আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।’
ইসতেফার পড়ার সময়ের অনুভূতি
ইসতেগফার পড়ার সময় মুমিনের মনে এ অবস্থা বিরাজ করবে যে-
ما عبدناك حق عبادتك و ما عرفناك حق معرفتك
হে আল্লাহ! আমাদের থেকে আপনার ইবাদতের (নামাজের) হক আদায় হয়নি। না জানি কত ভুল কত বিচ্যুতি এই ইবাদতে (নামাজে) সংঘটিত হয়েছে। হে আল্লাহ! আমরা (নামাজের সালাম ফেরানোর পর পর সর্বপ্রথম সেই সব ভুল-ত্রুটির জন্য আপনার কাছে ক্ষমা চাই, যা এই নামাজে সংঘটিত হয়েছে।’
কোরআনে ইসতেগফার
কোরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ইসতেগফার করার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা আল্লাহর নির্দেশ মেনে ইসতেগফারের আমলে নিজেদের নিয়োজিত করেছে, তারাই মুস্তাজাবুদ দাওয়ায় পরিণত হয়েছে। তারা আল্লাহর কাছে কোনো জিনিস চাইলে মহান আল্লাহ তাআলা তা বান্দাকে দান করেন। ইসতেগফার প্রসঙ্গে কোরআন-সুন্নায় যা এসেছে, তাহলো-
১. فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ وَ اسۡتَغۡفِرۡهُ اِنَّهٗ کَانَ تَوَّابًا
‘তখন তুমি তোমার রবের সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা চাও নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী।’ (সুরা নসর : আয়াত ৩)
২. وَّ اسۡتَغۡفِرِ اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا
‘আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১০৬)
৩. وَ اسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۡۢبِکَ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ
‘আর তুমি ক্ষমা চাও তোমার এবং মুমিন নর-নারীর ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।’ (সুরা মুহাম্মদ : আায়ত ১৯)
৪. فَقُلۡتُ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ؕ اِنَّهٗ کَانَ غَفَّارًا یُّرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا وَّ یُمۡدِدۡکُمۡ بِاَمۡوَالٍ وَّ بَنِیۡنَ وَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ جَنّٰتٍ وَّ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ اَنۡهٰرًا
‘সুতরাং বলেছি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই তিনি মহাক্ষমাশীল। (ইসতেগফার করলে) তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন। তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন জান্নাত তথা বহু বাগান ও প্রবাহিত করবেন নদ-নদী। (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
৫. وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا اَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَهٗ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ اللّٰهَ یَجِدِ اللّٰهَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا
‘আর যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি জুলুম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে; সে আল্লাহকে পাবে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১১০)
৬. وَ یٰقَوۡمِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡهِ یُرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا وَّ یَزِدۡکُمۡ قُوَّۃً اِلٰی قُوَّتِکُمۡ وَ لَا تَتَوَلَّوۡا مُجۡرِمِیۡنَ
‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এরপর তার কাছে তওবা কর, তাহলে তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সঙ্গে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না।’ (সুরা হুদ : আয়াত ৫২)
৭. وَ مَا کَانَ اللّٰهُ لِیُعَذِّبَهُمۡ وَ اَنۡتَ فِیۡهِمۡ ؕ وَ مَا کَانَ اللّٰهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَ هُمۡ یَسۡتَغۡفِرُوۡنَ
‘আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আজাব দেবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আজাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।’ (সুরা আনফাল : আয়াত ৩৩)
৮. وَّ اَنِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡهِ یُمَتِّعۡکُمۡ مَّتَاعًا حَسَنًا اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی وَّ یُؤۡتِ کُلَّ ذِیۡ فَضۡلٍ فَضۡلَهٗ ؕ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ کَبِیۡرٍ
‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দেবেন এবং প্রর্তেক আনুগত্যশীলকে তাঁর আনুগত্য মুতাবিক দান করবেন। আর যদি তারা ফিরে যায়, তবে আমি নিশ্চয়ই তোমাদের উপর বড় এক দিনের আজাবের ভয় করছি।’ (সুরা হুদ : আয়াত ৩)
হাদিসে ইসতেগফার
হাদিসের অনেক বর্ণনায় ইসতেগফার করার কথা এসেছে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও প্রতিদিন একশত বার ইসতেগফার করতেন। ইসতেগফার নিয়ে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
১. হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমরা এক মজলিশে গণনা করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একশত বার বলতেন-
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি; ওয়া তুব আলাইয়্যা; ইন্নাকা আংতাত তাউয়্যাবুর রাহিম।’
অর্থ : হে আমার রব! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার তওবা কবুল কর; নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী ও দয়াশীল।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সে সত্বার শপথ! যার হাতে আমার জীবন; যদি তোমরা গুনাহ না কর তবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের নিয়ে যাবেন এবং এমন এক সম্প্রদায় নিয়ে আসবেন; যারা গুনাহ করবে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম)
৩. হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিল, এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে, যে গুনাহ করে তওবা করে; পুনরায় গুনাহ করে। আবার তওবা করে আবার গুনাহ করে। আবার গুনাহের কাজে মশগুল হয় এবং আবার তওবা-ইস্তিগফার করে। এ রূপ করতে থাকা ব্যক্তির কি অবস্থা হবে? হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তার কর্তব্য হলো সর্বদা তওবা-ইস্তিগফার করতে থাকা। কেননা তওবা-ইস্তিগফার অব্যাহত থাকলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে যাবে। শয়তান বলবে, এ ব্যক্তিকে গুনাহর কাজে সর্বদা মশগুল রাখতে আমি অক্ষম।
৪. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তওবা করতে থাক। কেননা আমি নিজে দৈনিক ১০০ বার তওবা করি।
৫. হজরত আবু আইয়ুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একথা শুনেছি, যা তোমাদের কাছ থেকে গোপন রেখেছিলাম; তাহলো এই যে, তিনি বলেছেন, যদি তোমরা গুনাহ করে আল্লাহ তাআলার মহান দরবারে তওবা-ইসতেগফার না করতে, তবে আল্লাহ তাআলা এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যারা গুনাহ করে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা করতো, তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করতেন। (মুসলিম)
৬. নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইসতেগফার (তওবা) করবে, আল্লাহ ওই বান্দাকে তার সব সংকট থেকে উত্তরণের (মুক্তির) পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা (পেরেশানি) মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিক-এর ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসতেগফারের ফজিলত
১. গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
২. ইসতেগফারের মাধ্যমে বালা-মুসিবত দূর হয়।
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়।
৪. পরিবারে শান্তি আসে।
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়।
৭. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
৮. চিন্তা পেরেশানি দূর হয়।
৯. রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হয়।
১০. সুসন্তান লাভ হয়।
১১. নদী-নালা প্রবাহিত হয়।
১২. সম্মানিতদের সম্মান বৃদ্ধি হয়।
১৩. আজাব-গজব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১৪. মুস্তাজাবুদ দাওয়ার গুণ অর্জন হয়। অর্থাৎ ইসতেগফারকারী এমন হয়ে যাবেন, যখন তিনি কোনো দোয়া করবেন, আল্লাহ তাআলা তা কবুল করবেন।
১৫. পরকালে জান্নাত লাভ হয়।
কীভাবে ইসতেগফার করবেন
১. أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
নিয়ম : প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।’ (মিশকাত)
২. أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
নিয়ম : এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।’ (বুখারি)
৩. رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তওবা কবুলকারী করুণাময়।’
নিয়ম : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
৪. أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’
অর্থ : ‘আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তওবাহ করে) ফিরে আসি।’
নিয়ম : দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তওবাহ-ইসতেগফার করা। হাদিসে এসেছে- এভাবে তওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)
৫. সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।’
নিয়ম : সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।’ (বুখারি)
৬. رَبِّغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির, ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’
৭. অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় আমি প্রতিদিন ৭০ বার-এর অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তওবা করি-
اَسْتَغْفِرُ الله وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আসতাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি’
৮. বিশেষ করে ক্ষমা, রিজিকের সন্ধান ও বরকত পেতে এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়া-
رَبِّ اغْفِرْلِىْ ذُنُوْبِىْ وَافْتَحْ لِىْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি জুনুবি, ওয়াফতাহলি আবওয়াবা ফাদলিকা’
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও; আর আমার জন্য তোমার অনুগ্রহের দরজা খুলে দাও।’ (তিরমিজি)
৯. اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওয়ুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালো বাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
১০. اَسْتَغْفِرُوا اللهَ العَظِيْم اِنَّ اللهَ غَفُوْرُ الرَّحِيْم
উচ্চারণ : ‘আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম।’
অর্থ : মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
মুমিন মুসলমানের উচিত, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইসতেগফার করা। রিজিকে বরকতসহ কোরআন-সুন্নায় ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো পাওয়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে বেশি বেশি ইসতেগফারের আমল করার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নায় ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।