‘দেশে চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা’

0

দেশে ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসনের বিষয়টি উদ্বেগজনক। সরকার ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও এর বিস্তার কমছে না। এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দেশে কত রকমের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তাও বহুল আলোচিত। এত অভিযানের পরও কেন এর বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না? উদ্বেগজনক তথ্য হলো, কেনাবেচার জন্য নগদ অর্থ না থাকলে মানুষ ‘বন্ধক’ রেখে ইয়াবা নিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, বন্ধক রাখা ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্তের নির্ধারিত আস্তানায় বা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে। এরপর ইয়াবা বিক্রি শেষে টাকা পরিশোধ করে দিলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বন্ধক রাখা ব্যক্তিকে। মানুষ ‘বন্ধক’ রেখে ইয়াবা লেনদেনের পদ্ধতি চালু করে নবী হোসেন নামের এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। তার ডেরায় মানুষ বন্ধক রেখেই ইয়াবার কারবার চালিয়ে যাচ্ছে দেশের মাদক কারবারিরা। এখনো বেশ কয়েকজন বন্ধক রয়েছে নবী হোসেনের ডেরায়। তাদেরই একজন টেকনাফের আলি হোসেন। মাদকের টাকা পরিশোধ না করায় ‘বন্ধক’ রাখা আলি হোসেনকে আমানুষিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। টাকা পরিশোধে দেরি হলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কেবল উখিয়ার একটি গ্রামের শতাধিক ব্যক্তিকে নবী হোসেনের কাছে বন্ধক রেখে ইয়াবা আনা হয়েছে। দেশে এমন আরও কত চক্র এখনো সক্রিয়, তা খুঁজে বের করা জরুরি।

কোনো জিনিস সহজলভ্য হলে এর বিস্তার ঘটে দ্রুত। ইয়াবার ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। ইয়াবার সহজলভ্যতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে অভিযোগ রয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে তাদের কেউ কেউ ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক কেনাবেচা ও পাচারে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া মাদক পাচারের সঙ্গে প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী বা ক্ষমতাবানদের বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো টলারেন্স অবস্থানের কথা সর্বজনবিদিত। তবে তা কতটা কার্যকর হচ্ছে-এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

ইয়াবার চালান আসে মূলত মিয়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে। তবে অন্যান্য সীমান্তপথে, এমনকি আকাশপথেও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য আসে। বস্তুত সব অপরাধের মূলে রয়েছে মাদক। যেখানে মাদক আছে, সেখানে অবৈধ অস্ত্রসহ অন্যান্য অপরাধের ঘটনাও বেশি। কাজেই সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোরতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। ইয়াবার প্রবেশ ঠেকাতে দেশের সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারির পাশাপাশি পাচারের অন্যান্য রুটের দিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে আশা করি। সরকারের মাদকবিরোধী অভিযান এবং এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে-এটাই কাম্য।

সূত্র: যুগান্তর

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com