আত্মগৌরবের ব্যাপারে কোরআন-সুন্নায় যেসব নিষেধাজ্ঞা
নিজেকে নিজে ভালো মনে করাকে আত্মগৌরব বা খোসপসন্দী বলা হয়। এটাও অহংকারের একটি শাখা। তবে অহংকার ও আত্মগৌরবের মধ্যে পার্থক্য হলো, অন্যের তুলনায় নিজেকে বড় মনে করা অহংকার। আর অন্যের দিকে লক্ষ্য না করে শুধু নিজেকে নিজে মহৎ গুণ বা অভ্যাসের অধিকারী মনে করাই আত্মগৌরব।
নিজেকে নিজে ভালো বা উন্নত গুণের অধিকারী মনে করা ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহর দেওয়া গুণাবলীকে নিজের সম্পদ মনে করা আবার এসব গুণ ও ভালো অবস্থা হস্তচ্যুত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনোরূপ ভয় না করাকে আত্মগৌরব বা খোসপসন্দী বলা হয়। ইলমে তাসাউফের পরিভাষায় এটি উজ্ব। আত্মগৌরবের ব্যাপারে কোরআন-সুন্নায় নিষেধাজ্ঞা আছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَلَا تُزَکُّوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنِ اتَّقٰی
‘কাজেই তোমরা আত্মপ্রশংসা করো না। কে তাকওয়া অবলম্বন করেছে, সে সম্পর্কে তিনিই সম্যক অবগত।’ (সুরা নজম : আয়াত ৩২)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ প্রসঙ্গে বলেছেন-
وَمَاالْمُهْلِكَاتُ فَهَوَى مُتَّبِعُ وَ شُحٌّ مُطَاعٌ وَ إعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفِسِهِ وَ هِىَ أَشَدُّ هُنَّ
‘প্রবৃত্তির অনুগামী হওয়া, কৃপণতার অনুগত হওয়া এবং আত্মপ্রশংসায় লিপ্ত হওয়া; এগুলো হচ্ছে ধ্বংসাত্মক বদ অভ্যাসসমূহের অন্তর্ভূক্ত। তবে এসবের মধ্যে শেষেরটি অর্থাৎ আত্মগৌরব সবচেয়ে জঘন্য।’ (বায়হাকি, মিশকাত)
নিজেকে পসন্দ করা, নিজের রায়কে বিজ্ঞতম মনে করা এবং অন্যের মতামতের প্রতি কোনো গুরুত্ব প্রদান না করাতে বিভিন্ন ধরনের অকল্যাণ নিহিত আছে। এ ধরনের মন-মানসিকতার কারণেই পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি ইত্যাদি অসামাজিক গুরুত্বর কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে।
সুতরাং নিজের কাজ ও রায়কে নির্ভুল মনে না করে অন্যের রায়ের প্রতিও গুরুত্বারোপ করা উচিত। কিতাবে এসেছে, ‘اِتَّهِمُواْ رَايَكُمْ’ ‘তোমর তোমাদের নিজেদের রায়কে সন্দেহযুক্ত মনে করবে।’ এই নীতির অনুসরণ ছাড়া সুন্দর ও আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠিত হওয়া অসম্ভব।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আত্মগৌরব বা খোসপসন্দী থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূত্র: জাগো নিউজ