লালমনিরহাটে যুবলীগ নেতার পরকীয়া সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিকরা
লালমনিরহাটে যে পাঁচ সংবাদ কর্মীর ওপর হামলা চালিয়ে নির্যাতন করা হয়, তারা একটি পরকীয়ার ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) লালমনিরহাট সদর থানায় চার নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন যমুনা টেলিভিশনের আহত সাংবাদিক আনিছুর রহমান লাডলা। যদিও এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এর আগে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে হামলার শিকার হন যমুনা টিভির লালমনিরহাট প্রতিনিধি আনিছুর রহমান লাডলা ও ক্যামেরা পারসন আহসান হাবিব, প্রথম আলোর লালমনিরহাট প্রতিনিধি আব্দুর রব সুজন, এখন টিভির মাহফুজুল ইসলাম বকুল। সদর উপজেলার পঞ্চগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলে এ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার রহমান মণ্ডলের ছোট ছেলে ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সুলতান মণ্ডল (৩৮) প্রতিবেশী এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। কয়েকদিন আগে সেই গৃহবধূকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হন সুলতান মণ্ডল। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহে শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান তিন শীর্ষ সংবাদ প্রতিষ্ঠানের ৩ সাংবাদিক। তাদের সঙ্গে ছিলেন ক্যামেরা পারসন আহসান হাবিব। তথ্য সংগ্রহ শেষে সুলতান মণ্ডলের বাড়ির পাশে হঠাৎ তাদের পথরোধ করেন আজিজার রহমান মণ্ডল, তার বড় ছেলে সাহেদ মণ্ডল ও আরও কয়েকজন। এ সময় হাবিবের হাতে থাকা ক্যামেরা নিয়ে ভাংচুর করেন সাহেদ। পরে ক্যামেরার ট্রাইপড দিয়ে প্রথম আলো, যমুনা ও এখন টিভি সাংবাদিকদের এলোপাতাড়ি মারধর করতে শুরু করেন।
ঘটনার পর আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। পরে শনিবার ভোরে আহত সাংবাদিক আনিছুর রহমান লাডলা পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার রহমান, তার ছেলে সাহেদ ও তার বাকি দুই ভাইয়ের নামে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় অজ্ঞাতনামা আও ২১ জনকে।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ মামলা পরবর্তীতে অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে নিয়ে নথিভুক্ত করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। একই সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেছেন তারা। এ ছাড়া অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে জেলা জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনগুলো।