তুমরার কাছে আমি ভিক্ষা চাই, আমারে দেশে ফিরাইয়া নেও, আমারে মাইরালাইব

0

‘তুমরার কাছে আমি ভিক্ষা চাই। আমারে দেশে ফিরাইয়া নেও। তিন বছর ধইরা আমারে আটকাইয়া রাখছে। আমারে ধরে-মারে। মালিকে মারে, মালিকের পুলা-পুইরে মারে। খানি (খাবার) একবার দিলে আরেকবার দেয় না। ঘরের ভিত্রে তালা মাইরা রাকে। দেশে ফিরাইয়া না নিলে আমারে মাইরালাইব, লাশ কইরা বাংলাদেশে পাঠাইব।’

ভিডিও বার্তায় কেঁদে কেঁদে মায়ের কাছে আকুতি করছিলেন সৌদি আরবপ্রবাসী শিল্পী আক্তার। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের তৈইগাঁও গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে তিনি।

শিল্পীর মা নূর চান বিবি জানান, ২০১৯ সালের এপ্রিলে সৌদি আরবে যান তার ২৫ বছর বয়সী মেয়ে শিল্পী। সেখানে যাওয়ার পর একটি বাসায় গৃহকর্মীর চাকরি পান শিল্পী। শিল্পী নিশ্চিত নন তার বাসা সৌদি আরবের কোন রাজ্যের কোন এলাকায়।

তিনি আরও জানান, কাজে যোগ দেওয়ার পরই তার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। কাজে ছোটখাট ভুল হলেই মারধরের শিকার হন শিল্পী। প্রতিনিয়ত তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন বাসার মালিক, তার ছেলে ও মেয়েরা। প্রথমে মা-বাবা ও অসচ্ছল পরিবারের কথা চিন্তা করে সব নির্যাতন নীরবে সয়ে যান শিল্পী।

শিল্পীর সঙ্গে কথা ছিল, দুই বছর সেখানে থাকার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু দুই বছর অতিক্রম হলেও তাকে দেশে পাঠানো হয়নি। উল্টো ভিসার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। দেশে আসার কথা বললে শিল্পীর ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে বর্তমানে শিল্পী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মা-বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চাইলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না।

নূর চান বিবি বলেন, আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই। কিন্তু তারা আমার মেয়েকে দিচ্ছে না। ট্রাভেলসের লোকেরাও আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে না। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে এনে দিন।

শিল্পীর বাবা বলেন, সংসারে অভাবের কারণে মেয়েকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলাম। এখন আমার মেয়ে খুব কষ্টে আছে। আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই।’

ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার ফোর সাইট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডর মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়েছিলেন শিল্পী।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com