আওয়ামী লীগপন্থীরা সুপ্রিম কোর্ট বারের গত ৭৫ বছরের ঐহিত্য লঙ্ঘন করেছে

0

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কনফারেন্স রুমের তালা ভেঙ্গে ভোট পুনর্গণনা করে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আবদুন নূর দুলালকে সমিতির সম্পাদকের চেয়ারে বসানোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। তারা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগপন্থীরা সুপ্রিম কোর্ট বারের গত ৭৫ বছরের ঐহিত্য লঙ্ঘন করেছে।

তারা অবিলম্বে সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন। একইসাথে অবৈধ প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদকের রুম দখলকে প্রত্যাখ্যান করে দলমত নির্বিশেষ সকল আইনজীবীকে এর বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এ জে মোহাম্মদ আলী এ আহ্বান জানান।

এসময় সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল এবং বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফলাফল ঘোষণার মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সাথে যে অনভিপ্রেত আচরণ করা হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে এই সুপ্রিম কোর্টের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে লঙ্ঘন করে নজিরবিহীনভাবে সন্ত্রাসী এবং অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়, যা সুপ্রিম কোর্ট বারের ৭৫ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। আইনের সর্বোচ্চ পাদপিঠে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। পেশাগত কাজে নিয়োজিত হাজার হাজার আইনজীবীর মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। আমরা অবিলম্বে সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে এই অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানাচ্ছি। সাথে আবদুন নূর দুলালের অবৈধ প্রক্রিয়ায় সেক্রেটারির রুম দখলকে প্রত্যাখ্যান করছি। দলমত নির্বিশেষ সকল আইনজীবীকে এর বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হওয়ার জন্য আহ্বান করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এতবড় কাণ্ড ঘটে গেল। বাংলাদেশের জুডিশিয়ারি ধ্বংস হয়ে গেল। এই অবস্থায় আমরা প্রধান বিচারপতির কোনো ভূমিকা আমরা দেখি নাই। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে সুয়োমোটো রুল জারি করা উচিৎ ছিল। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়। তারা সুপ্রিম কোর্ট বারের একটা সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমাদের দাবি প্রধান বিচারপতির কাছে। আদালত খোলার পূর্বেই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একইসাথে নির্বাচিত কমিটিকে পুনর্বহাল করার দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। সহ-সম্পাদকসহ আমাদের আটজন নির্বাচিত হয়েছে। সবাই যাতে একসাথে কাজ করতে পারে সেইরকম একটা রুলিং আমরা প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে চাই। এই আইনজীবী সমিতির প্রায় দশ হাজার আইনজীবীর এর প্রতি সমর্থন আছে। আইনজীবীরা বলছেন, এইরকম ভোট ডাকাতি কেউ কখনো দেখেনি ‘

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্য কোথাও না হলেও এখানে একটা সুন্দর নির্বাচন হতো। অথচ সেখানে আজ ভোট ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমরা ৫ মে’র মধ্যে প্রধান বিচারপতি কি পদক্ষেপ নেন, সে পর্যন্ত অপেক্ষা করব। পদক্ষেপ না নিলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com