ফ্রান্সের চূড়ান্ত নির্বাচন কাল, যত ভয় লুপেনকে নিয়ে

0

মাত্র একদিন পর রোববার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্ব। দেশটির পরবর্তী পাঁচ বছরের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আগামীকাল। চূড়ান্ত পর্বে লড়ছেন ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট অ্যামানুয়েল ম্যাঁক্র ও র‌্যাসেলমেন্ট ন্যাশনাল পার্টির মারিন লুপেন।

গেলো কয়েক দশকের মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন নিয়ে এবারের মতো এতো আলোচনা-সমালোচনা ছিল না। শেষ ধাপের এই নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নির্বাচক বিশ্লেষকরা।

এবারের নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে দেশটিতে বসবাসরত মুসলমানদের মধ্যে। তাদের চিন্তার মূল কারণ মারিন লুপেন। চরম ডানপন্থী এই প্রার্থী ইতোমধ্যে যেসব ঘোষণা দিয়েছেন, তা মুসলমানদের জন্য সত্যিই কি উদ্বেগের? এ নিয়ে কথা হয় প্যারিসে বসবাসরত মুসলমানদের সঙ্গে। লুপেন যা যা বলেছেন তার মধ্যে দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি ভাবনায় ফেলেছে তাদের।

লুপেন অঙ্গীকার করেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে ফ্রান্সে পাবলিক প্লেসে কোনো নারী হিজাব পরে গেলে সঙ্গে তাকে জরিমানা করা হবে। এছাড়া ফ্রান্সে কোনো হালাল মাংসের দোকান থাকবে না বলেও তিনি স্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে তুর্কি বংশোদ্ভূত প্যারিসে হালাল মাংসের দোকানের ব্যবসায়ী তাসনুভ যারার বলেন, এমন হলে আমাদের এখানে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অথচ এখানের আলো-বাতাসে আমার বড় হয়ে ওঠা। এখানেই লেখাপড়া করেছি। এ দেশটির প্রতি আলাদা ভালোবাসা রয়েছে।

একই কথা বলছিলেন আলজেরিয়ান ফরাসী ইয়ানিস। তার মতে, লুপেন নিজের ব্যক্তিগত মতামতটাকে একটা জাতির ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন। যদিও অধিকাংশ ফরাসি তা প্রত্যাখ্যান করছেন।

একই রকম উদ্বেগে আছেন ফ্রান্সের বাংলাদেশি প্রবাসীরাও। কুমিল্লার প্রবাসী নাজনিন সুলতানা বলেন, ফ্রান্সের সংবিধান যেখানে নারীদের সবধরনের স্বাধীনতা দিয়েছে সেখানে কেউ এসে জোরপূর্বক আমাদের হিজাব খুলে নেবে, তা ভাবাই যায় না।

আরেক নবাগত প্রবাসী কামরুজ্জামান। তিনি ভয় করছেন, ২৪ তারিখের নির্বাচনে যদি লুপেন জয়ী হয় যান, তাহলে তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের কী হবে?

শুধু হিজাব আর হালাল মাংসের দোকানই নয়, মারিন লুপেন মূলত ফ্রান্সে মুসলিম অভিবাসীদের দেখতে চান না। তার মতে, মুসলমান অভিবাসীরা ফ্রান্সের মূল ধারাকে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যারাতে ফ্রান্সের TF1 টিভিতে দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সরাসরি বিতর্কে বসেন। এই বিতর্কে মারিন লুপেন তার এসব বিষয় তুলে ধরলে অ্যামানুয়েল ম্যাঁক্র তা সরাসরি খণ্ডন করেন।

ম্যাঁক্র বলেন, হিজাব নিয়ে এমন কোনো আইন আমরা দেখতে পাই না। এটা সংবিধান বিরোধী। ফ্রান্সে যদি এ ধরনের কোনো আইন তৈরি করা হয়, তাহলে দেশকে মূলত গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com