ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত: মোবাইল যেখানে বন্দুকের চেয়ে শক্তিশালী
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইসরাইলের প্রচণ্ড প্রভাবের কারণে অনেক সময় ফিলিস্তিনের প্রকৃত চিত্র সেখানে ফুটে ওঠে না। তারপরেও ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতে স্মার্ট মোবাইলগুলো বন্দুকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইসরাইলের আগ্রাসী চরিত্র আগের চেয়েও ভালোভাবে চিত্রিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে আরব নিউজ।
ইসরাইলের অভিযোগের কারণে শত শত ফিলিস্তিনির ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্ট অচল করে দেয়া হয়েছে। ইসরাইল দাবি করে যে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বিভিন্ন ‘উত্তেজক বিষয়বস্তু’ আছে। তাদের দাবি মেনে নিয়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের অনেকগুলো অ্যাকাউন্ট অচল করে দিয়েছে। এখানে ফিলিস্তিনিদের অপরাধ তারা ইসরাইলের বর্বরতা ও নিপীড়নের চিত্র প্রকাশ করেছেন এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে।
কিন্তু, ফিলিস্তিনিরাও হাল ছাড়ার পাত্র নয়, তারা ইসরাইলি সহিংসতা ও নিপীড়নের চিত্র এখন টিকটকের মাধ্যমে প্রচার করে যাচ্ছেন। এ বিষয়টি ইসরাইলকে রাগান্বিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার কর্তৃপক্ষের মতো চীনা অ্যাপ টিকটক তাদের দাবি মানে না।
টিকটক হলো বেইজিং-ভিত্তিক চীনা বহুজাতিক কোম্পানি বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন একটি অ্যাপ। এ কারণে চীনের এ অ্যপটি ইসরাইলের অন্যায় দাবিগুলো মানছে না। ফলে টিকটক এখন ফিলিস্তিনিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এ টিকটক অ্যাপটি ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিরা এখন ইসরাইলের অন্যায় আচরণগুলো বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে। পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেমে ইসরাইলের অত্যাচার ও নিপীড়নের চিত্রগুলো টিকটকের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে #ফ্রি প্যালেস্টাইন ট্রেন্ডের মাধ্যমে ইসরাইলি নির্মমতার চিত্র প্রকাশ করা হচ্ছে।
২০২২ সালের জানুয়ারির তথ্যানুসারে ৩০ লাখ ৭২ হাজার ফিলিস্তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করেন। এ কারণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতে স্মার্ট মোবাইলগুলো বন্দুকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।
কারণ, মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলিদের আক্রমণ, বিভিন্ন চেকপোস্টে ইসরাইলি সেনাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সাথে খারাপ আচরণ, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের বাড়ি-ঘর ভাঙ্গা ও আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলিদের তাণ্ডবের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের এসব ভিডিও ফুটেজের কারণে বিশ্বে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ ইসরাইলের পাশবিকতার কথা জানতে পারছে এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করছে। এমনকি বিভিন্ন ইসরাইলবিরোধী আন্দোলনেও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে।
সূত্র : আরব নিউজ