ফের ক্ষমতায় আসবেন ম্যাক্রোঁ?
২০০২ সালের পর কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্ট পরপর দুবার নির্বাচিত হননি। তবে এবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আবারও নির্বাচিত হতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে। দেশটিতে নির্বাচনের দুই ধাপে ভোটের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে গত রোববার (১০ এপ্রিল)।
রোববারের ভোটে ডান-বাম এবং মধ্যপন্থী মিলিয়ে ১২ জন প্রার্থী অংশ নেন। তাদের মধ্যে চারজন নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। প্রথম পর্বে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশ। ভোটের প্রথম পর্বে ক্ষমতাসীন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জয়ী হয়েছেন।
এবার দ্বিতীয় পর্বে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে লড়বেন চরম ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী প্রতিদ্বন্দ্বী মেরি লে পেন। প্রধান দুই শীর্ষ নেতা দ্বিতীয় পর্বের ভোটে অংশ নিচ্ছেন আগামী ২৪ এপ্রিল।
অনেকেই ধারণা করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও দেশটির দায়িত্বভার পেয়ে যাবেন। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁও এ বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। আবার অনেকেই মনে করছেন, প্রথম পর্বে উতরে গেলেও দ্বিতীয় পর্বে জয়ী হওয়া ম্যাক্রোঁর জন্য কঠিনও বটে।
প্রথম পর্বে ম্যাক্রোঁর ঝুলিতে পড়েছে ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট। অপরদিকে মেরি লে পেন ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থান দখল করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিতীয় পর্বের ভোটের অবস্থান নিয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু বুঝা যাচ্ছে না। তবে জরিপের দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যায় যে, জরিপ সংস্থাগুলো ম্যাক্রোঁর ব্যাপারে কিছুটা অস্পষ্ট তথ্যের কথা জানাচ্ছে। কোনো কোনো জরিপ বলছে, ভোটের ব্যবধান খুব সামান্যই হতে পারে দ্বিতীয় ধাপের লড়াইয়ে।
এবারের ভোটের ফলাফলে ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পেনশন, পরিবেশ ও অভিবাসন সংকটের ইস্যুগুলোতো আছেই।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত জানুয়ারি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশটির অর্থনীতি। কিন্তু জ্বালানি নিয়ে জটিলতা ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের।
এ ছাড়া ফ্রান্সে বেকারত্ব সমস্যাও রয়েছে। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। অভিবাসন ইস্যুতে দেশটির পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের হিসাবে সেখানে এখন অভিবাসী রয়েছেন ৬ লাখ ৮০ হাজার।
অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেরি লে পেন। অন্যদিকে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথা বলেছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি এটাও দাবি করেন যে, তার সময়ে অপরাধ কমেছে দেশটিতে। ফ্রান্সে কয়েক বছর ধরে হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। ফলে ভোটারদের কাছে নিরাপত্তা ইস্যুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: বিবিসি, ডয়েচে ভেলে