ইস্তাম্বুলে আলোচনায় কোনো ফল হয়নি
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনে ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে দুই পক্ষের আলোচনায় কোনো ফল আসেনি বলে জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন।
বুধবার মস্কোতে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান।
পেসকভ জানান, রাশিয়া বৈঠক থেকে আশাদায়ক বা ফলদায়ক কিছুই দেখছে না। এর জন্য আরো লম্বা সময় কাজ করতে হবে।
তবে আলোচনায় ইউক্রেন তাদের দাবি লিখিতভাবে দেয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলের দোলমাবাহচে প্রাসাদে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আলোচকরা জানান, ইউক্রেনের নিরপেক্ষ থাকার বিষয়ে তারা রাশিয়ার দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও স্থায়ী শান্তিরক্ষায় তৃতীয় কোনো দেশের জামিন নেয়ার সাপেক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে হবে।
ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই নিরাপত্তা নিশ্চয়তার আন্তর্জাতিক কর্মকৌশল যেখানে জামিন নেয়া দেশটি ন্যাটোর আর্টিকেল নম্বর পাঁচের অনুসারেই পদক্ষেপ নেবে এবং তা পালন করবে আরো জোরালোভাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ভবিষ্যতে রাশিয়ার সাথে চুক্তির জেরে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জামিন থাকার জন্য তুরস্ক, জার্মানি, কানাডা, ইতালি, পোল্যান্ড ও ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনায় বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ইউক্রেনে সামরিক তৎরতা কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলো রাশিয়া।
এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে কয়েক দফায় দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে একবার তুরস্কের আনতালিয়াতেও মুখোমুখি হয় দুই পক্ষের প্রতিনিধি দল। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধে চূড়ান্ত কোনো লক্ষ্যে এখনো পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সৈন্য পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে রুশ স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে পুতিন ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। ইউক্রেনকে ‘বেসামরিকীকরণ’ ও ‘নাৎসিমুক্ত’ করার জন্যই তিনি এই অভিযান চালিয়েছেন বলে দাবি করছেন।
সূত্র : আলজাজিরা