মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে জান্তাপ্রধানের হুঙ্কার
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধীদের ‘নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে’ বলে হুমকি দিয়েছেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ২৭ মার্চে আয়োজিত কুচকাওয়াজে জান্তাপ্রধান সাবধান করে দিয়ে এ কথা বলেন। জান্তাপ্রধান আরও বলেন, সেনাশাসন উচ্ছেদে লড়তে থাকা গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ‘সামরিক বাহিনী আর সমঝোতা করবে না…এবং শেষ না হওয়া পর্যন্ত (গণতন্ত্রপন্থীদের) নিশ্চিহ্ন করবে। ’
উল্লেখ্য, গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের এক বছর পূর্তি হয়েছে আজ রবিবার।
স্থানীয় পর্যবেক্ষণকারীদের তথ্যমতে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৭০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
রাজধানী নেপিদোতে ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ট্রাক, আর্টিলারি ও অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে প্রদর্শিত গতকালের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিন অং হ্লাইং। সেখানে ৮ হাজার সেনার সামনে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী হাল ছাড়বে না।
মিয়ানমারজুড়ে জান্তাবিরোধী ‘পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স’ এর যোদ্ধারা প্রায়ই হাতে তৈরি এবং হালকা অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে জান্তার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক বাহিনীকে অতর্কিত আক্রমণ মোকাবেলা করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
চীন ও থাইল্যান্ডের সীমান্ত অঞ্চলের জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যেও প্রতিরোধ যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, দেশটির বাণিজ্যনগরী ইয়াঙ্গুনে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে অল্পসংখ্যক আন্দোলনকারী আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি বাহিনী কর্তৃক চালানো আগ্রাসনের সময় স্থানীয়দের প্রতিরোধ স্মরণে মিয়ানমারে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হয়। এদিন আয়োজিত কুচকাওয়াজে সাধারণত কূটনীতিক ও বিদেশি অতিথিরাও উপস্থিত থাকেন।
গত বছর সদ্য ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান হিসেবে মিন অং হ্লাইং কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের সময় প্রতিবাদকারীদের ওপর সময় ব্যাপক নির্যাতন চালায় সরকারি বাহিনী। রক্তক্ষয়ী সেই দিনে প্রায় ১৬০ জন প্রতিবাদকারী নিহত হন। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীদের প্রতিবাদ এর পর বড়ভাবে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর গোচরে আসে। সূত্র: এএফপি