ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হিজাব মামলা দ্রুত শুনতে রাজি নন

0

হিজাব মামলা গ্রহণ করলেও সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত তার শুনানির জন্য দিন ধার্য করলেন না। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবীকে বলেন, এ মামলার সঙ্গে পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। অযথা উত্তেজনা ছড়াবেন না। এ মামলার শুনানি সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি দেশের সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্যও শুনতে চাননি।

কর্ণাটকে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেঁধে দেওয়া ইউনিফর্মই মান্যতা পাবে বলে সরকারি নির্দেশ জারি হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে মুসলিম ছাত্রীরা মামলা করলে কর্ণাটক হাইকোর্ট রায় দেন, হিজাব ইসলামে অপরিহার্য নয়। ওই রায়ের পর হিজাব পরে শিক্ষালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বেশ কিছু ছাত্রী। অনেকে প্রিইউনিভার্সিটি পরীক্ষা দিতে পারেননি। তাঁদের আর একটা সুযোগ দিতেও অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার।

এ ডামাডোলের নিরিখে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির আরজি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির মনোভাব বুঝিয়ে দেয়, তাড়াহুড়া করে এ মামলা শোনার কোনো অভিপ্রায় তাঁদের নেই। বরং মুসলমান ছাত্রী আইশাৎ শিফার আইনজীবী দেবদত্ত কামাথকে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ মামলার সঙ্গে পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই পরীক্ষার কথা বলে অযথা উত্তেজনা ছড়াবেন না। কামাথের আরজি ছিল, হিজাবের দরুন ছাত্রীদের অনেককে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণে দ্রুত মামলাটি শোনা হোক।

কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ের পরদিন ১৬ মার্চ ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হিজাব মামলা সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়। প্রধান বিচারপতি তখন বলেছিলেন, দোল উৎসবের ছুটির পর মামলা শোনা হবে। কিন্তু গতকাল সর্বোচ্চ আদালতের মনোভাবের পর এখন এটি নিশ্চিত নয় মামলাটির শুনানি কবে শুরু হবে।

কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ের পর রাজ্যের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিশেষ সুখকর নয়। প্রধান বিচারপতিসহ হাইকোর্টের তিন বিচারপতির যে বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিলেন, তাঁদের মৃত্যু ভয় দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। রাজ্য পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে দুজনকে আটক করেছে। ওই হুমকির পর বিচারপতিদের বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব ছাত্রী হিজাব ছাড়া পরীক্ষা দিতে রাজি হননি, তাঁদের আরও একবার সুযোগ দেওয়ার আরজি রাজ্য সরকার নাকচ করে দিয়েছে। সামনে আরও পরীক্ষা রয়েছে। হিজাব নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার অনড়।

সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে সাম্প্রতিক এক সিদ্ধান্তে। রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন হিন্দু মন্দিরের বার্ষিক উৎসব এ সময়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে বিরাট মেলা বসে। আগামী মাসের ২০ তারিখে মহালিঙ্গেশ্বর মন্দিরের বার্ষিক মেলা। বছরের পর বছর ধরে সেই মেলায় হিন্দু–মুসলমান ব্যবসায়ীরা দোকান দিয়ে আসছেন। এবার প্রথম তার অন্যথা হতে চলেছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, কোনো মুসলিম ওই মেলায় স্টল দিতে পারবেন না। হিন্দু জাগরণ মঞ্চ নামের এক সংগঠনের চাপে এ সিদ্ধান্ত বলে বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিমত। কর্ণাটক বিধানসভার ভোট আগামী বছর।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com