জমি অধিগ্রহণ বন্ধের দাবিতে নদীভাঙা মানুষদের মানববন্ধন
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দয়ালপুর মৌজায় ভুয়াপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
শনিবার দুপুরে বসতবাড়ি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগ ভুয়াপুর-তারাকান্দি মহাসড়কে এ মানববন্ধন করা হয়।
এতে চেচিয়াবাঁধা, দৌলতপুরসহ কয়েকটি গ্রামের নদীভাঙা ও দিনমজুর শ্রেণীর তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে জামালপুর ভূমি অধিগ্রহণ শাখা গত ১০ জানুয়ারি এলাকার শতাধিক লোককে নোটিশ দিয়েছে। এলাকার অধিকাংশ মানুষ নদীভাঙা ও খেটে খাওয়া প্রান্তিক শ্রেণীর। ইতোপূর্বে বাংলাদেশ রেলওয়ে, যমুনা সারকারখানা এবং সড়ক ও জনপথ আরো তিন-চারবার এ এলাকার জমি অধিগ্রহণ করে। বারবার তারা জমিহারা হয়ে মাত্র ৬০০ মিটার জমির মধ্যে প্রায় ৫০০ পরিবার বস্তির মতো বসবাস করে আসছেন।
তারা অভিযোগ করেন, প্রায় ১০০ জনের নামে নোটিশ দেয়া হলেও এদের ওয়ারিশগণ বিভক্ত হয়ে ৫ শতাধিক পরিবার হয়ে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন আগের রেকর্ডভুক্ত জমিগুলো কাগজে-কলমে ডোবা-নালা থাকলেও বর্তমানে সেগুলো উঁচু বসতঘর। সরকার অধিগ্রহণের ফলে আগের ডোবা-নালা হিসেবে ভর্তুকির টাকা প্রদান করবে। এতে তারা একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও অন্যদিকে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, বসতবাড়ি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা মিরন আহম্মেদ, স্থানীয় নুরুল ইসলাম, কমলা বেগম, সাদ্দাম হোসেন, আনিসুর রহমান, কামরুল হাসান, মোকাদ্দেস আলী প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল মিয়া জানান, তার বাবা মৃত হাসেন আলীর নামে অধিগ্রহণের নোটিশ এসেছে। ২ ভাই, ৫ বোন ও মা-সহ ওয়ারিশ এখন ৭ জন। কিন্তু জমি মাত্র ৬ শতাংশ। সামান্য এ জমিটুকু হারালে যে ভর্তুকি পাওয়া যাবে তা দিয়ে সব ওয়ারিশের বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে না।
মানসিক ভারসাম্যহীন নুরি বেগম বলেন, তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে বাবার দেয়া পৌনে ১ শতক জমিতে কোনোরকম বসবাস করে আসছেন। এ জমিটা হারালে তাকে পথে বসতে হবে বলে অভিযোগ করেন তিনি।