ইউক্রেন সংকট: কূটনৈতিক যুদ্ধেই সমাধান!

0

ইউক্রেন প্রশ্নে কোনো যুদ্ধ করার ইচ্ছে নেই রাশিয়ার। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নাকি এমন আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ইউক্রেন সংকট কাটাতে ম্যাক্রোঁ গিয়েছিলেন মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে আলাপ করতে। সেই আলাপেই এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। কিন্তু পুতিন যতই আশ্বাস দিন না কেন, সতর্ক অবস্থানে ইউরোপ। আর তাই তো গত মঙ্গলবার ইউরোপে সম্ভাব্য একটি যুদ্ধ ঠেকাতে বার্লিনে মিলিত হন জার্মান, ফরাসি ও পোলিশ নেতারা। বৈঠকে রাশিয়াকে সামরিক হুমকি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে তারা ইউক্রেন সংকটের একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পুতিনের আশ্বাস প্রশ্নে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকার কারণ ক্রিমিয়ার অভিজ্ঞতা। পুতিন যখন ক্রিমিয়া দখল করেন, তখন জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। মের্কেলের সঙ্গে এক মাসে ৩৬ বার আলাপ হওয়ার পরেও ক্রিমিয়ার দখল নেন পুতিন। তাই এবার পুতিন যতই আশ^াস দিন না কেন, যুদ্ধ ঠেকাতে নিজেদের সবটুকু দিয়ে নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে চাইছেন ইউরোপের নেতারা। এই কৌশলের প্রথম ধাপে রয়েছে কূটনৈতিক পদক্ষেপ। এরপরই আছে ইউরোপের রাশিয়ার প্রতি নির্ভরতা কমাতে দীর্ঘমেয়াদে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইউরোপ।

এদিকে বৈঠক শেষে বার্লিনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা। এ সময় জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘আমাদের সাধারণ লক্ষ্য হলো ইউরোপে একটি যুদ্ধ প্রতিরোধ করা। ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার আর কোনো লঙ্ঘন গ্রহণযোগ্য নয়। এটি রাশিয়ার জন্য ব্যাপক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূকৌশলগত পরিণাম বয়ে নিয়ে আসবে। এটা পশ্চিমা দেশগুলোর সাধারণ অবস্থান।’ সংবাদ সম্মেলনে সংলাপের প্রতি অঙ্গীকার এবং ইউক্রেন সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন জার্মান চ্যান্সেলর।

ইউক্রেনে রুশ হামলার আশঙ্কার মধ্যেই সম্প্রতি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে জার্মানি ও ফ্রান্স। এর মধ্যেই পোল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে বার্লিনে মিলিত হলো ইউরোপের প্রভাবশালী এই দুই দেশ। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দাবি, পুতিনও যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আলোচনার মাধ্যমে যাতে যুদ্ধের ঝুঁকি থামানো যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে সব বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে একমত নন ম্যাক্রোঁ। ইউক্রেন ইস্যুতে ন্যাটোর অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, যেকোনো স্বাধীন দেশের ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

অন্যদিকে গত সোমবার হোয়াইট হাউজে জার্মান চ্যান্সেলরকে সঙ্গে নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে নর্ড স্ট্রিম ২ নামে পরিচিত রাশিয়ার প্রধান একটি গ্যাস পাইপলাইন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, মস্কো যদি ইউক্রেনে হামলা চালায় তাহলে ওই পাইপলাইনটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বহুল আলোচিত ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের কথা রয়েছে। তবে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই পাইপলাইনটির কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com