যত দুর্ভোগ জনগণের

0

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাস ভাড়া বাড়ানোর পর রাজধানীর পরিবহণ সেক্টরে শুরু হওয়া নৈরাজ্য অব্যাহত রয়েছে। ফলে বন্ধ হয়নি যাত্রী ভোগান্তি।

জানা গেছে, যাত্রীদের জিম্মি করে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। পরিবহণ মালিকরা সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দিলেও ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ওয়েবিল হিসাব করে।

এদিকে নতুন ভাড়া শুধু ডিজেলচালিত বাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে বর্ধিত ভাড়া আদায় করছে সিএনজিতে চলাচল করা বাসও। এ ক্ষেত্রে নানা কারসাজির আশ্রয় নিচ্ছেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা।

এর একটি কৌশল হচ্ছে, সিএনজিচালিত বাসে লাগানো হয়েছে ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার। অনেক বাসে গোপন রাখা হয়েছে সিএনজি সিলিন্ডার ও গ্যাস ঢোকানোর নাজাল। এভাবে যাত্রীদের ঠকাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন কিছু অসাধু পরিবহণ নেতা। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

দেখা যাচ্ছে, ডিজেলের ভাড়া বৃদ্ধিতে বাস মালিক এখন পোয়াবারো! তারা এতে লাভবান হয়েছেন। যত দুর্ভোগ জনগণের। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারকে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

আমরা দেখেছি, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা। এটি জনগণকে জিম্মি করার শামিল। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য তো জনগণ দায়ী নয়।

বস্তুত পরিবহণ সেক্টরে এক নৈরাজ্য বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরেই। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যা খুশি তা-ই করা হচ্ছে এ সেক্টরে। এসব কোনোমতেই বরদাশ্ত করা উচিত নয়। আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই, সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণার পর আর একটি বাসও যেন যাত্রীদের কাছ থেকে ওয়েবিল হিসাব করে ভাড়া আদায় করতে না পারে, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

যাত্রী যে স্টপেজে নামবেন, সেই স্টপেজ পর্যন্তই ভাড়া নিতে হবে, এর বেশি নয়। একইসঙ্গে কোনো সিএনজিচালিত বাস যেন কোনোভাবেই বাড়তি ভাড়া নিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাস ভাড়া বৃদ্ধির পর পরিবহণ সেক্টরে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা দমন করতে হবে।

এ ব্যাপারে আমরা বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চাই। জানা গেছে, বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সক্রিয় দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক বাস বন্ধ রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এর ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, পরিবহণ সেক্টরে নৈরাজ্য রোধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি পরিবহণ মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিষয়টির একটি যৌক্তিক সুরাহা করা উচিত। যেভাবেই হোক, পরিবহণ সেক্টরকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। বাস ভাড়া নিয়ে যাত্রী ভোগান্তি নিরসনে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com