১ বছরেও উদঘাটন হয়নি বালাগঞ্জের ছাত্রদল নেতা সায়েম হত্যার রহস্য

0

বালাগঞ্জে ভোটকেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ হয়ে উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সায়েম আহমদ সোহেল নিহতের ঘটনার এক বছর পূর্তি হলো গতকাল। মৃত্যুবার্ষিকীতে সায়েম স্মরণে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সায়েমকে নিয়ে স্মৃতি পোস্ট করছেন তারা। ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে (সিলেট-৩ বালাগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ) বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সায়েম আহমদ সোহেলকে উদ্ধার করা হয়। কিভাবে তিনি গুলিবিদ্ধ হলেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাকি কোনো দুস্কৃতিকারী তাকে গুলি করছে সে বিষয়টি এখনো অজানা রয়ে গেছে। এ ঘটনায় জনমনে নানামুখী প্রশ্ন ঘুরপাক  খাচ্ছে। নিহত সায়েম সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে সহায়তা করতে গিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল। তাদের অভিযোগ, ভোটকেন্দ্র দখলকারীদের বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করা হয়েছিল।

সায়েম নিহতের ঘটনাকে ভোটাধিকার রক্ষা করতে প্রাণ দেয়ার কথা বলেছিলেন তারা।

জানা যায়, বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের নলজুড় গ্রামের  মো. ফজলু মিয়া ও মোছা.  রোকেয়া বেগম দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে সায়েম আহমদ সোহেল। তার জন্ম ১৯৮৫ সালের ৬ই জুলাই। বড় ভাই থাকেন ইংল্যান্ডে। ছোটকাল থেকেই পরোপকারী সায়েম এলাকার অসহায় মানুষকে বিভন্নভাবে সহযোগিতা করতেন। নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রাইম একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এলাকায় ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সামাজিক কাজে তিনি পৃষ্ঠপোষকতাও করতেন। শেষ বয়সে ভালো নেই সায়েমের মা-বাবা। তারা ছেলের প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

 ভোটের দিনের ঘটনা সম্পর্কে জানতে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বিদ্যালয়ের সামনের অংশ  দেয়াল দিয়ে ঘেরা। বেলা ২টার দিকে মধাহ্নভোজের বিরতির কথা বলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় জাল ভোটের খবর ছড়িয়ে পড়লে সায়েমসহ ছাত্রদল ও বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে চাইলেও তাদেরকে বাধা দেয়া হয়। পরে সায়েমসহ অন্যরা কেন্দ্রের পশ্চিম দিকে গিয়ে জানালা দিয়ে কেন্দ্রের ভেতরের অবস্থা  দেখতে গেলে তাকে গুলি করা হয়। সায়েমকে ঘটনাস্থল  থেকে উদ্ধার করা পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. আশিক মিয়া বলেন, কেন্দ্রের পেছন দিকে গিয়ে উঁকি দিতেই তার উপর গুলি ছোড়া হয়েছিল। নিহতের চাচাতো ভাই বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান বলেন, আমার ভাইকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি কতটুকু ন্যায়বিচার পাবো এ নিয়ে শঙ্কায় আছি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঠাণ্ডা মাথায় খুব কাছ থেকে সায়েমকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। প্রকৃত খুনিকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে গত বছরের ৩১শে ডিসেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলাটির তদন্ত চলেছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com