আগামী সপ্তাহে মোদীর সঙ্গে দেখা হতে পারে মমতার
সব কিছু ঠিক থাকলে, আগামী সপ্তাহেই ফের দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, ২২ নভেম্বর রাজধানীতে পা রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার কথা ২৫ তারিখ। মাঝের দু’দিন দিল্লিতে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। আলোচনার সম্ভাব্য বিষয়, বিভিন্ন খাতে রাজ্যের বকেয়া টাকা এবং সীমান্ত-লাগোয়া অঞ্চলে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি।
বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে এসেছিলেন। সেই সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিলেন। এ বারের দিল্লি সফরেও বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে, বিশেষ করে সনিয়ার বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই জল্পনা দানা বাঁধার মূল কারণ, গত কয়েক মাসে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেসের সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তন। মাঝের এই সময়ে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার কংগ্রেসকে আক্রমণ করে নিজেদের দলকেই বিজেপির আসল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরেছেন। ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেসকে বিঁধে তৃণমূল আসলে বিজেপিকে ভোট-ময়দানে সুবিধা করে দিচ্ছে বলেও বার বার অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেসেরই অভিযোগ, সিবিআই, ইডির তদন্ত থেকে রেহাই পেতেই বিজেপিকে এ ভাবে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের সীমান্ত-লাগোয়া ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো নিয়ে রাজ্যের আপত্তির কথা তুলে ধরবেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী আগেই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। নভেম্বরের শেষে সংসদে যে অধিবেশন শুরু হবে, সেখানেও তৃণমূল এ নিয়ে সরব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময়ে এ বিষয়ে রাজ্যের তীব্র আপত্তির কথা তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্যের আর্থিক বকেয়া, অভাব-অভিযোগ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সোমবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বৈঠকে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ বিষয়ে সরব হয়েছেন।
রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্র সেস বসিয়ে নিজের আয় বাড়াচ্ছে। রাজ্যগুলি তার ভাগ পাচ্ছে না। রাজ্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্য জিডিপি-র ৫% ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা দাবি করেছিল। তা না মেনে ৩.৫% করা হয়েছে। একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিপূরণ বাবদও অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবেও কম টাকা মিলছে বলে অভিযোগ রাজ্যের।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা