তাইওয়ান ইস্যুতে পরস্পরকে সতর্কবার্তা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের
তাইওয়ান ইস্যুতে পরস্পরের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মধ্যকার ভার্চুয়াল বৈঠকের আগে উভয় দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।
তাইওয়ান ইস্যু, বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকর পটভূমির মধ্যেই সোমবারের ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এ সময় তিনি তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অপরদিকে, তাইওয়ানের স্বাধীনতার সমর্থনকারী বলে মনে হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া এমন যে কোনও পদক্ষেপের সমূহ বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন ওয়াং ই।
চীন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীন সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে।
১৯৭৯ সালে তাইপে থেকে বেইজিং-এর দিকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি সরিয়ে নেয় ওয়াশিংটন। কিন্তু সেই বছরই তাইওয়ানের আত্মরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, এমন একটি আইন মার্কিন কংগ্রেসে পাস হয়।
ওয়াশিংটন তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করলেও কংগ্রেসে দ্বিদলীয় সমর্থন ব্যক্ত করে এ মাসেই একদল আইনপ্রণেতা দ্বীপ দেশটিতে সফরে যান। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এমন সফরে ক্ষুব্ধ হয় বেইজিং।
বেইজিং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান উপকূলে তাদের সামরিক কার্যক্রম বাড়িয়েছে। অক্টোবরের শুরুতে দ্বীপটির আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলে রেকর্ড সংখ্যক চীনা বিমান অনুপ্রবেশ করেছে। সূত্র: ভিওএ।