অবশেষে সবুজসঙ্কেত, কাবুলে গম পৌঁছতে দিল্লির প্রস্তাবে সায় ইমরান সরকারের
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান। সেই পরিস্থিতির মোকাবিলায় সে দেশে গম পৌঁছে দিয়ে আফগান জনতার পাশে দাঁড়াতে চাইছে ভারত। কিন্তু যে বিপুল পরিমাণ গম কাবুলে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে নয়াদিল্লি, তা কোনও ভাবেই আকাশপথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পাকিস্তানের উপর দিয়ে সড়কপথেই পৌঁছতে হবে সেগুলি। ভারত থেকে পাঠানো গমের ট্রাক আফগানিস্তানে পৌঁছে দিতে পাকিস্তানের সড়কপথ ব্যবহার করার অনুমতি চেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বেশ কিছু দিন ফাইলবন্দি রাখার পরে অবশেষে আজ সেই প্রস্তাবে সবুজসঙ্কেত দিয়েছে ইমরান খানের সরকার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আজ টুইট করে বলা হয়েছে, ‘‘আফগানিস্তানে গম পাঠানোর বিষয়ে ভারত যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য আফগান ভাইয়েরা অনুরোধ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রস্তাবটি বিবেচনা করবে। কী ভাবে তা বাস্তবায়িত করা হবে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ইসলামাবাদ।’’
পাক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এমন টুইট সামনে আসার আগে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন। গম পৌঁছনোর বিষয়টি ওই আলোচনায় উঠেছিল। সেই বৈঠকেই ভারতের প্রস্তাবে ইসলামাবাদের সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার আশ্বাস দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, আফগানিস্তানের সঙ্কট মোকাবিলায় ইসলামাবাদ সব রকম সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ইমরানের দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস মোকাবিলা সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলি, আফগানিস্তানবাসীর অধিকার, সরকার পরিচালনার মতো বিষয়গুলি নিয়ে তালিবানের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ভয়াবহ খাদ্যসঙ্কটের সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তালিবানের নিয়ন্ত্রণে থাকা আফগানিস্তানে ভারত যে খাদ্য পাঠাতে চাইছে, সে কথা অক্টোবর মাসেই সামনে এসেছিল। তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার সময়েই নয়াদিল্লি এই ধরনের সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দিন দিন সঙ্কট বেড়েই চলেছে। ইউএন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম-এর আধিকারিকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ না করলে এই শীতের মরসুম থেকেই আফগানিস্তানের লক্ষ লক্ষ মানুষের মুখে খাবার উঠবে না। অনাহারে দিন কাটাতে হতে পারে সে দেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষকে।