আফগান ইস্যুতে যে অবস্থানে বাইডেন ও পুতিন
আফগানিস্তানের পরিস্থিতিতে নিজেদের তালেবানবিরোধী অবস্থানের কথা জানান দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে জো বাইডেন বলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নাগরিকসহ অন্যদের বের করে আনতে তালেবানের ওপর নির্ভর করতে হলেও তিনি দলটিকে বিশ্বাস করেন না।
বাইডেন বলেন, তালেবানকে মৌলিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি আফগানিস্তানের জনগণের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নিবে কি না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি তাই হয় তবে তাদের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে বাড়তি সাহায্যের প্রয়োজন হবে। তালেবান বলছে তারা স্বীকৃতি চাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখবো তারা তাদের প্রতিশ্রুতির রক্ষা করে কি করে না।’
পরে তালেবানের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার প্রসঙ্গে জো বাইডেনের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তালেবানের ওপর অবরোধকে তিনি সমর্থন করেন তবে তা তাদের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।
অপরদিকে সোমবার আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিয়েটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সদস্যদের এক অনলাইন সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার বক্তব্যে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্মেলনে পুতিন আফগানিস্তান থেকে মধ্য এশিয়ায় ‘ইসলামী উগ্রবাদীদের’ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এর আগে রোববার রাশিয়ার ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির এক সম্মেলনে আফগানিস্তানের পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন পুতিন।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেন তিনি।
এর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ‘তালেবানের বিকল্প কেউ নেই’ মন্তব্য করা হলেও সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ওলেগ সিরোমলোটভ বলেন, তালেবান আফগানিস্তান শাসন করলেও রাশিয়া দলটিকে তার সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেবে না।
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে দেশটি থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় ওয়াশিংটন। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।
চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালেবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্যে পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাতে শুরু করে তালেবান। মে থেকে অভিযান শুরুর পর সাড়ে তিন মাসের মাথায় রাজধানী কাবুলের অধিকার নেয় তালেবান যোদ্ধারা।
সূত্র : আলজাজিরা, সিএনএন, আরটি