পরীমণিদের সংবাদে মহিলা পরিষদের ক্ষোভ
আইন-শৃঙ্খল বা সাম্প্রতিক অভিযানে গ্রেপ্তার পরীমণিসহ অভিনেত্রী-মডেলদের নিয়ে কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত প্রতিবেদনে নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে মহিলা পরিষদ। এসব সংবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নারী সংগঠনটি। একই সাথে গ্রেফতার সহকর্মীদের (পরীমণি, পিয়াসাদের) নিয়ে শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মহিলা পরিষদ।
গতকাল রোববার এ বিষয়ে উদ্বেগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
গত ৩০ জুলাই মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম মৌকে, তারপর চিত্রনায়িকা পরীমণিকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার আগে গ্রেফতার করা হয় ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে। তাদের বাড়িতে মদ, মাদকদ্রব্য, জুয়া খেলার সামগ্রী পাওয়ার কথা জানানো হয়।
আলোচিত গ্রেফতার অভিযান নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে গণমাধ্যমে একের পর এক প্রতিবেদনও প্রকাশ-প্রচার হচ্ছে।
মহিলা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোনো নারী ঘটনার শিকার বা অভিযুক্ত যাই হোক না কেন, এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হয়, যাতে নারীর আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। এই ঘটনাসমূহ নারীর প্রতি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। যখন গণমাধ্যমকে জেন্ডার সংবেদনশীল করতে নারী আন্দোলন বিশেষ ভূমিকা রাখছে, গণমাধ্যমও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সময়ে সহযোগী ভূমিকা রেখে চলেছে; সেইসময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো কোনো গণমাধ্যমের ভূমিকা নারীর মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করছে।
বিবৃতিতে নারী নেত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা লক্ষ্য করলাম এই ক্ষেত্রেও সংবাদ উপস্থাপন ও শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে পাঠক-দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে, যা সুস্থ সাংবাদিকতার পরিপন্থি।
ব্যক্তি নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, এমন কোনো ধরনের সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন মহিলা পরিষদ নেতারা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এক্ষেত্রে বিচারের আগেই দোষি করে দেয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে, যা প্রত্যাশিত নয়। বিচারের আগেই এই ধরনের সংবাদ পরিবেশন নারীর ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি করবে।
নারীদের যারা অপরাধে ব্যবহার করছে, তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অপরাধের মূল কারিগরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় না আনায় নারী ও কন্যাদের ব্যবহার করা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এই প্রবণতা যে নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে এই ঘটনাগুলো তারই প্রতিফলন। মহিলা পরিষদ মনে করে, এই সকল ঘটনার হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’