সাংবাদিকদের বাসা ঘেরাও, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি: টিআইবি
মৌলভীবাজারের লাঠিটিলার ক্রান্তীয় চিরসবুজ ও দেশের অন্যতম জীববৈচত্র্যপূর্ণ বনভূমিতে সাফারি পার্ক নির্মাণে বন-বিভাগের পরিকল্পনা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (০৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে টিআইবি এমন প্রতিক্রিয়া জানায়।
এতে উল্লেখ করা হয়, পর্যটনের নামে পরিবেশ বিধ্বংসী এ জাতীয় প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি টিআইবি সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকর্মীদের ভয়-ভীতি প্রদশর্নকে স্বাধীন গণমাধ্যমের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া একজন সাবেক বন সংরক্ষকের নেতৃত্বে সম্পন্ন হওয়া একটি সমীক্ষার ওপর নির্ভর করে সংরক্ষিত বনের মধ্যে সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা এই উদ্যোগের সার্বিক উদ্দেশ্যকেই প্রশ্ননবিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মৌলভীবাজারে জাতীয় উদ্যানসহ বেশ কয়েকটি ইকোপার্ক থাকা সত্ত্বেও ক্রান্তীয় চিরসবুজ বনে সাফারি পার্ক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা কতটুকু? সংরক্ষিত বনের মধ্যে সাফারি পার্ক স্থাপন এবং বিবিধ অবকাঠামো নির্মাণ হলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়াসহ বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব বিলুপ্তি এবং দীর্ঘমেয়াদে পুরো বন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা বন্য প্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা করছেন, তা অমূলক নয়।
এছাড়া এই সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক স্থাপন করা হলে বনের মধ্যে ছয়টি গ্রামের তিনশ পরিবার ও বননির্ভর স্থানীয় জনগোষ্ঠী উচ্ছেদের আশঙ্কা রয়েছে।
তাই লাঠিটিলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সাফারি পার্ক নির্মাণ না করে স্থানীয় অধিবাসী ও বিশেষজ্ঞদের মতমতের প্রতি গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানায় টিআইবি।
পরিবেশ বিধ্বংসী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগে অতীতে গৃহীত ও বাস্তবায়িত এ জাতীয় প্রকল্পসমূহের ফলাফল এবং সংরক্ষিত বনের সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়গুলো ব্যাপক ভিত্তিক পর্যালোচনা জরুরি উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংরক্ষিত বনভূমিতে সাফারি পার্ক নির্মাণের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের জেরে স্থানীয় সাংবাদিকদের বাসা ঘেরাও, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি স্বরুপ।
এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা জরুরি।