টুইট যুদ্ধের পর অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে থানায় বিজেপি নেতা

0

কয়েক দিন আগে কলকাতার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের সঙ্গে টুইট যুদ্ধে নামেন প্রবীণ রাজনীতিক তথা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সাবেক রাজ্যপাল তথাগত রায়। তর্কের একপর্যায়ে লেখেন, “আর পারছি না! ক্ষ্যামা দে, মা লক্ষ্মী!” এর পর সায়নী চুপ থাকলেও বিজেপি নেতা কয়েক বছর আগের টুইটকে কেন্দ্র করে আইনি পথে হাঁটলেন।

কলকাতার সংবাদমাধ্যম জানায়, অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন তথাগত। হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করার দায় এখন সায়নীর ঘাড়ে। 

তথাগত টুইটার প্রোফাইলে অভিযোগপত্রের ছবি পোস্ট করেছেন। সেই সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে সায়নী ঘোষের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি গ্রাফিক শেয়ার হয়েছিল। একটি শিবলিঙ্গের ছবি, তাতে কনডম পরাচ্ছে এক নারী।

গ্রাফিক থেকে বোঝা যাচ্ছে, ওই নারীকে এইডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের মাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাফিকের ভেতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। পোস্টের ক্যাপশনে ছিল, “এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না ঈশ্বর।”

এখন বিজেপি নেতার অভিযোগ, হিন্দু ধর্মের পবিত্রতাকে নষ্ট করছেন সায়নী। শনিবার কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর থানায় তিনি এই অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগপত্রে লেখা, “আমি শিবের ভক্ত। ১৯৯৬ সালে শিবের পূজা দেওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা করেছিলাম। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের এই ছবিটি দেখে আমার ধর্মীয় ভাবাবেগ আহত হয়েছে। আমার আরজি, আপনারা এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে।”

এফআইআরের ছবি শেয়ার করে তথাগত ক্যাপশনে লেখেন, “সায়নী ঘোষ, আপনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়ে‌ছে। এর মধ্যে গুয়াহাটি থেকে একজন ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন, তার ভাবাবেগও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনিও মামলা দায়ের করবেন। আশা করি, আসাম পুলিশ এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ করবে।” 

তবে অভিযোগটি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন সায়নী ঘোষ। টুইটারে জানান, ২০১৫ সালে তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল। অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার পর ছবিটি সরিয়ে ফেলেছিলেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কখনোই কারোর ধর্মকে তিনি আঘাত করতে চাননি।

তার ভাষায়, “আমি আগেই বলেছি যে ২০১৫ সালের টুইটটির বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম। যেই মুহূর্তে সেটিকে আমার নজরে আনা হয়,  আমি সেটার তীব্র নিন্দা করে সবাইকে জানিয়ে ডিলিট করি… তবে আজকের এই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে যে বিদ্বেষের সম্মুখীন আমাকে হতে হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে সায়নী বলেন, ‘‘আইনি প্রক্রিয়া চলবে নিজের মতো। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব আমি। তবে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। মানুষ সব বুঝতে পারছেন। তারাই বিচার করবেন।’’

এর আগে শুক্রবার টুইটারে বাক-যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তথাগত রায় ও সায়নী ঘোষের মধ্যে। তার আগের দিন একটি বাংলা চ্যানেলে অতিথি বক্তা হিসেব উপস্থিত হয়েছিলেন সায়নী। সেখানে তিনি বলেছিলেন,  ‘‘যে ভাবে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানটিকে রণধ্বনিতে পরিণত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ভুল। উপরন্তু, এটি বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেও পড়ে না। ঈশ্বরের নাম ভালোবেসে বলা উচিত।’’  এর পরেই সায়নীর বিরুদ্ধে পোস্ট দেন তথাগত। তর্কাতর্কির  একপর্যায়ে রণ ভঙ্গ দিয়ে বলেন,   “আর পারছি না! ক্ষ্যামা দে, মা লক্ষ্মী!”

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com