মাস্কই হোক প্রধান প্রতিষেধক
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও রোগ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস রুখতে বাংলাদেশকে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই টিকা সংগ্রহ করতে হবে। তবে এটাও ঠিক, টিকা আসুক আর না আসুক মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক। ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’-এটা শুধু মুখের নয়, কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কেউ এলে তাকে সত্যি সত্যিই কোনো সার্ভিস দেওয়া যাবে না। সবাইকে মাস্ক পরতেই হবে, অন্তত টিকা আসা পর্যন্ত।
বিশিষ্ট এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব তাদের লিভার, হার্টসহ অন্যান্য জটিল রোগ থাকলে তারা অবশ্যই বাসায় থাকবেন। তারা বাসা থেকে বেরুবেন না। এগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হবে। অবশ্যই তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
বি চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা কম হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দিনে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার হতে পারে। কিন্তু আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। বিশ্বের কোথাও কোথাও ১ লাখের মতো করোনার পরীক্ষা হয়। সেখানে রোগী ধরাও পড়ে বেশি। আমাদের পরীক্ষা কম, রোগীও কম ধরা পড়ছে। আমি মনে করি, আমাদের দেশে টেস্টের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। যত বেশি টেস্ট করা যাবে তত বেশি রোগী শনাক্ত হবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। করোনার পরীক্ষা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলেই আমি মনে করি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে অক্সফোর্ড ও ফাইজারের ভ্যাকসিন ভালো। তবে ফাইজারের টিকা যে তাপমাত্রায় রাখা জরুরি, সেটা আমাদের দেশে সম্ভব নয়। এ কারণে বাংলাদেশের জন্য অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নেওয়াই উচিত। তবে এটা সরকারকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। করোনার টিকার মূল্য কম হওয়া উচিত মন্তব্য করে ডা. বি চৌধুরী বলেন, ভ্যাকসিনের সর্বোচ্চ দাম দুই ডলার হওয়া উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, অনুন্নত বা গরিব দেশগুলোতে ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দেওয়া হবে। কিন্তু বিনামূল্যে না দিলেও এর দাম বেশি রাখা উচিত নয়। এ জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রয়োজনে চাপ দিতে হবে। টিকার মূল্য দুই ডলার হলেও মানুষের সাধ্যের মধ্যে পড়বে। দেশের সবাইকে যে ভ্যাকসিন দিতে হবে তার কোনো মানে নেই। তবে আমি মনে করি, অন্তত ৫০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া উচিত। ষাট ভাগ মানুষকে টিকা দিতে পারলেই বাকি চল্লিশ ভাগ মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। তাদের আর টিকা দিতে হবে না। এক্ষেত্রে যাদের বেশি জরুরি, তাদের আগে টিকা দিতে হবে। কিন্তু যতদিন টিকা না আসবে, ততদিন মাস্ক অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে।