অস্ট্রিয়ায় হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ায় সাংবিধানিক অদালত ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাথা ঢেকে হিজাব পরিধান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) অস্ট্রিয়ার সাংবিধানিক আদালতের প্রধান ক্রিস্টোফ গ্রেবেনওয়ারটার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা এটা অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক ও ধর্মীয় স্বাধীনতার পথে অন্তরায়। ’ খবর বিবিসির।
ক্রিস্টোফ গ্র্যাবেনওয়ার্টার বলেন, ‘কেবল মুসলিম শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ আইনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জারি করা হয়েছিল। যেটা শিক্ষা কার্যক্রমে চরম বৈষম্য তৈরি করেছে। আইনটির মাধ্যমে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগকে সীমিত করার ঝুঁকি আছে এবং তাদেরকে সমাজ থেকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। ’
গেল বছরে অস্ট্রিয়া হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞাদেশ দেন। আইনে মাথা ঢেকে রাখা বিষয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ‘ধর্মীয় পোশাক’ দিয়ে মাথা ঢাকার নিষেধাজ্ঞা’র কথা বলা হয়। এতে সবার মাথা ঢেকে রাখ নিষেধ করা হয়নি। এমনকি শিখ ছেলেদের মাথা ঢাকা বা ইহুদী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় টুপি এর আওতায় না থাকার কথা জানিয়েছিল সরকার। কেবল মুসলিমদের মাথা ঢাকা নিষেধ করতেই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল।
গ্রাবেনওয়ার্টার আরও জানান, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুসলিমদের ধর্মীয় পোশাক নিষেধাজ্ঞার ফলে সমাজে কলঙ্কজনক শ্রেণিবৈষম্য তৈরি হতে পারে। তাছাড়া নিষেধাজ্ঞা আইনটি সংবিধানের মূলভিত্তি নিরপেক্ষতা নীতি লঙ্ঘন করে। ’
গ্র্যাবেনওয়ার্টার জানান, সাংবিধানিক আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অস্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর কুর্জের বাধ্যবধকতা রহিত হবে। এ বিষয়ে আদালতে শরণাপন্ন হওয়া পরিবারের ফিয়ের ভার গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি।
২০১৭ সালের পরিসংখ্যান মতে অস্ট্রিয়ায় প্রায় সাত লাখ মুসলিম বসবাস করে। মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮ ভাগ মুসলিমের বসবাস। ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালে তুরস্ক থেকে অনেক মুসলিম অস্ট্রিয়ায় কাজ করতে এসে বসবাস শুরু করে। গত বছর ১৯ মে চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কুর্জের কনজারভেটিভ পার্টি ও ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।