দিল্লির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বাংলার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে ‘কড়া’ প্রত্যাঘাত!

0

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার পর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তলব করেছিল রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপি’কে। কিন্তু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিল্লি না গিয়ে আপাতত ‘কড়া’ প্রতিক্রিয়া দিয়ে চিঠি পাঠালেন মুখ্যসচিব। তাতে দিল্লি না যাওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট।

ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি লিখেয়ে এই বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকে লেখা ওই চিঠিতে মুখ্যসচিব উল্লেখ করেছেন, ‘ডায়মন্ড বারবারের ঘটনায় তদন্ত করছে রাজ্য। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাই শারীরিক উপস্থিতি থেকে আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’ অর্থাৎ মুখ্যসচিব ও ডিজিপি দিল্লি যাচ্ছেন না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এদিন অবশ্য তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ই সাফ বলেন, ‘রাজ্যের তরফে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও হামলা হয় কী করে? কনভয়ের পিছনে বাইক মিছিল করা হচ্ছিল। সেখানে রাকেশ সিং ছিলেন। সেখান থেকেই উত্তেজনা ছড়ায়।’ এমনকী মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠানো প্রসঙ্গেও কল্যাণ বলেন, ‘এভাবে মুখ্যসচিব ও ডিজিপি’কে ডেকে পাঠানো অসাংবিধানিক।’ তখনই কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, দিল্লি যাবেন না মুখ্যসচিব ও ডিজিপি। বিকেলে সেটাই স্পষ্ট হল। উল্লেখ্য, নাড্ডার কনভয়ে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর মুখ্যসচিব ও ডিজিপি’কে ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে রাজ্যের মুখ্যসচিব লেখেন, ‘জেপি নাড্ডার কনভয়ের জন্য জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও পাইলট কার। ছিল সিআরপিএফ-এর এসকর্ট কার। এছাড়াও পিএসও (সিআরপিএফ), চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৮ জন ইস্পেক্টর, ৩০ জন অফিসার, ১৪৫ জন কনস্টেবল ও ৩৫০ জন সিভিক পুলিশ দেওয়া হয়েছিল।’ শুধু তাই নয়, এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিজেপি সভাপতি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হতেই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনায় সরব হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডিজিপি বীরেন্দ্রকে রিপোর্ট সহ সন্ধে ৬টায় রাজভবনে দেখা করতে বলেন তিনি। সেই বৈঠকের পরই টুইটে তিনি লেখেন, মুখ্যসচিব বা রাজ্য পুলিশের ডিজি কেউই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি। এরপরই তাঁদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ডেকে পাঠানো হয়।

এদিন আবারও রাজ্যপাল সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার আমি রাজ্যের আইনের শাসন ও সাংবিধানিক স্বাধীনতা তলানিতে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছি। ফলে আমার পক্ষে সংবিধান মেনে রাজ্যে শাসন করার কাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ছে। গতকাল যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনা গণতন্ত্রের উপরে সরাসরি আঘাত।’ এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের সঙ্গে কার্যত সম্মুখ সমরে নেমে পড়ল রাজ্য।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com