দিশাহারা মোদি সরকার, আবারো কৃষকদের সাথে কথা বলতে চান
ভারতে দিন দিন জোরালো হচ্ছে কৃষকদের আন্দোলন। রাত পোহালেই ‘রাস্তা রোকো’ কর্মসূচি কৃষক সংগঠনের। বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিল্লিমুখী হাইওয়ে। দিল্লি-জয়পুর, দিল্লি-আগ্রা। সোমবার ১৪ তারিখ দেশজুড়ে বিক্ষোভ। বিজেপি এমপি, বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও।
এছাড়াও সিংঘু এবং তিক্রি, দিল্লির দুই সীমানা অভিমুখে আন্দোলনে অংশ নিতে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু থেকে রওনা দিয়েছেন হাজার হাজার কৃষক। কৃষক আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় কোণঠাসা মোদি সরকার।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দিশাহারা মোদি সরকার। তাই বৃহস্পতিবার তড়িঘড়ি বিশেষ সাংবাদ সম্মেলন ডেকে কৃষকদের প্রতি কেন্দ্রের ফের আবেদন, আন্দোলন নয়, আবার আলোচনায় বসুন।
ভারতের কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টনমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বললেন, ‘কৃষক এবং কেন্দ্রের বর্তমান অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ, আলোচনা। আর কোনো পথ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঠানো স্রেফ ২০ পাতার প্রস্তাবই নয়, তার মধ্যে সামান্য কোনো শব্দ নিয়েও যদি কৃষকদের আপত্তি থাকে তাও সংশোধনে রাজি। কিন্তু অনুরোধ একটাই, আইন বাতিলের দাবি ছেড়ে আলোচনায় বসুন। কারণ সংসদে পাশ হওয়া আইন পুরোটাই খারাপ হতে পারে না।’
খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেন, ‘সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে যে প্রস্তাব কৃষষকদের পাঠানো হয়েছে, তার বাইরেও যদি আরো কোনো অংশ নিয়ে তাদের মনে আশঙ্কা বা সন্দেহ থাকে, তা নিয়েও আলোচনা করতে রাজি।’
কৃষকদের মন পেতে দুই মন্ত্রী ফের জানান, নতুন আইনে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ হচ্ছে না। এটা স্রেফ কৃষি-বাণিজ্য সংক্রান্ত আইন, যা আনার অধিকার কেন্দ্রের আছে। নতুন আইনের সঙ্গে এমএসপি বা এপিএমসি মান্ডির বর্তমান ব্যবস্থার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। তাই যেদিনই কৃষকরা আলোচনার প্রস্তাব দেবেন, আমরা প্রস্তুত।
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে তারা এও স্পষ্ট করে দেন, আইন বাতিল হবে না। অর্থাৎ কৃষকদের দাবি মানবে না মোদি সরকার। গুরুত্বও দেওয়া হচ্ছে না রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়া বা না-হওয়া আইন বাতিলের দাবিতে সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও।
উল্টে, কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকে নরেন্দ্র মোদি কৃষক স্বার্থে কী কী করেছেন তার তালিকা তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী তোমার। উদ্দেশ্য, কৃষকদের মন জয় করা।
কৃষিমন্ত্রী দাবি করেন, ‘ইউপিএ’র ১০ বছরের শাসনে ভারতীয় মুদ্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ মওকুফ করার বিষয়টি বড় ঘটনা হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু মোদি স্রেফ পিএম কিষাণ প্রকল্পে বছরে কৃষকদের ৭৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছেন। তাই কে প্রকৃত কৃষকবন্ধু, চাষিরা তা ভালোই জানেন। সেই কারণেই রাজ্যে রাজ্যে নির্বাচনে জিতছে বিজেপি। অন্য কেউ নয়।’