ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যেভাবে দেখছে এই জয়কে
নয়া দিল্লিতে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এক হাজারতম ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের ম্যাচ হিসেবে। এই সিরিজে উভয় দলই ছিলো অনেকটা তারুণ্য নির্ভর। বাংলাদেশ যেমন সাকিব, তামিম, সাইফউদ্দিনকে ছাড়া সফরে গিয়েছে, ভারতীয় দলও বিশ্রামে পাঠিয়েছে নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি, অভিজ্ঞ মহেন্দ্র সিং ধোনীদের।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন ভার্সন ম্যাচ রিপোর্টের শুরুটা করেছে এভাবে- ‘তারুণ্যভরা দুটি দলের মধ্যকার ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের চাবিকাঠি ছিল অভিজ্ঞদের হাতেই। বাংলাদেশের সিনিয়র ব্যাটসম্যানরা সেটি করে দেখিয়েছেন, ভারতীয়রা পারেনি।’।
পত্রিকাটির সংবাদের যে শিরোনাম দিয়েছে তার বাংলা করলে দাড়ায় ‘মুশফিকের ব্যাটে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয় পেল বাংলাদেশ’।
আরেক জনপ্রিয় ইংরেজী দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, সাকিব না থাকলেও দমেনি টাইগাররা। মুশফিকের ব্যাটে তারা ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে। পত্রিকাটি তাদের রিপোর্টের শুরুতেই টেনে এনেছে ব্যাঙ্গালুরুতে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচের সেই ঘটনার কথা। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের নানা প্রশ্ন ও ফেসবুক, টুইটারে মুশফিককে নিয়ে ট্রোলের কথা উল্লেখ করে লিখেছে, ‘কিন্তু এই সন্ধ্যায় ফিরোজ শাহ কোটলায় দলের সেরা অলরউন্ডারকে ছাড়াই মুশফিক দলকে জেতালেন। দেশের সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের যোগ্যতার আরো একবার প্রমাণ দিলেন’।
দ্য হিন্দু তাদের রিপোর্টে মুশফিকের কৃতিত্বের পাশাপাশি ভারতীয়দের দুর্বল ফিল্ডিংকে রোহিত শর্মার দলের পরাজয়ের জন্য দায়ী করেছে। এছাড়া প্রয়োজনের সময় বাংলাদশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম ও সৌম্য সরকারের পার্টনারশিপকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা ম্যাচ নিয়ে একাধিক রিপোর্ট করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, গত কয়েক দিন যে ঝড় ঝাপ্টা গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর দিয়ে সেখান থেকে শুধু বের হওয়া নয়, ভারত সফরে গিয়ে দারণভাবেই পাল্টে গেছে বাংলাদেশ দল।
রিপোর্টে সাকিব, তামিম ও সাইফউদ্দিনকে ছাড়াই বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশি দর্শকদের উচ্ছ্বাস নিয়ে আলাদা একটি রিপোর্ট করেছে পত্রিকাটি। সেখানে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ‘অথচ ভারতে পা রাখার আগে পর্যন্ত একের পর এক বিতর্ক তাড়া করে বেড়িয়েছে দলটাকে। বাংলাদেশ দলে বেতন নিয়ে বিদ্রোহ। বুকিদের কথা গোপন করে শাস্তির কোপে সাকিব আল হাসান। মাঠের বাইরে তামিম ইকবাল। আর দুঃসহ দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছে এর আগে আটটি টি২০ ম্যাচ জিততে না পারার স্মৃতি। রবিবার এ সব কিছুর যেন ট্রিবিউট হয়ে রইল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের রূপকথাটা। প্রবল স্নায়ুচাপ সামলে ঠান্ডা মাথায় নিজেদের ড্রেসিংরুমেই ম্যাচটা নিয়ে চলে গেল বাংলাদেশ।’