সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়া কে সেই জুয়াড়ি?
জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। দেশসেরা ক্রিকেটারকে তিনবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন দীপক আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি। অন্যতম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পর পরই লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি।
আগারওয়াল ভারতীয় নাগরিক। তার আসল নাম বিক্রম আগারওয়াল। সাকিবের পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রিকেটারের মোবাইল ফোন নাম্বারটি পান তিনি। এর পর হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এ ইন্ডিয়ান জুয়াড়ি।
আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মোট তিনবার সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন আগারওয়াল। তার সব প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেন অন্যতম ওয়ার্ল্ড নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। তবে সেসব তথ্য আকসু কিংবা দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানাননি তিনি।
ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কারণে এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছেন আগারওয়াল। বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্জাইজিভিত্তিক ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে বেশ কয়েকবার কারাগারে গেছেন তিনি।
আইসিসির চিহ্নিত জুয়াড়ি আগারওয়াল। কাউন্সিলের কালো তালিকায় ওপরের দিকে আছে তার নাম। এ মুহূর্তে মোস্ট ওয়ান্ডেট তিনি।
২০১৩ সালে ফিক্সিংয়ের দায়ে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার হন বলিউড অভিনেতা বিন্দু দারা সিং এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের জামাতা গুরুনাথ মায়াপ্পান। ফিক্সিংয়ের সঙ্গে আগারওয়ালের জড়িত থাকা কথা স্বীকার করেন তারা।
আগারওয়াল মূলত একজন হোটেল ব্যবসায়ী। চেন্নাই শহরে দুটি হোটেল আছে তার। ১২৯ কক্ষের ব্যবসায়িক হোটেল ফরচুন সিলেক্ট পামস এবং পাঁচতারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লুর মালিক তিনি। ভিভিএ হোটেল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান ও আইটিসি হোটেল গ্রুপের সদস্য এ জুয়াড়ি।
দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মাধ্যমে হোটেল ব্যবসায় পা রাখেন আগারওয়াল। এতে চটজলদি তার ভাগ্য বদলে যায়। রাতারাতি কোটিপতি বনে যান তিনি। এর পরই জুয়াড়ি চক্রে জড়িয়ে পড়েন। বুকি হয়ে অনেকসময় ভিক্টর পরিচয়েও বিভিন্ন খেলোয়াড়, কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আগারওয়াল।
এ জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেটে দুই বছর নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তবে দায় স্বীকার করায় এর মধ্যে এক বছর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে এক বছর পরই খেলতে পারবেন তিনি। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আইসিসির দেয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে সাকিবকে। এর মধ্যে আবারও অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে তাকে।