ভারতের শুল্ক বাধাই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির কারণ: রুবানা
বাংলাদেশ-ভারতের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির জন্য প্রতিবেশী দেশটির শুল্ক বাধাকেই দায়ী করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক।
“ভারতের উচিৎ বাংলাদেশকে মুক্ত বাজার অর্থনীতির সুযোগ দেওয়া,” বলেছেন তিনি।
বুধবার বিশ্ব ব্যাংক আয়োজিত ‘আঞ্চলিক সহযোগিতা : দক্ষিণ এশিয়া ‘কোভিড- ১৯’ পুনরুদ্ধারকে কীভাবে সহায়তা করতে পারে’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে একথা বলেন রুবানা।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ১০ শতাংশ ভারতের সঙ্গে হলেও পাল্লা বরাবরই ভারতের দিকে হেলে আছে।
রুবানা বলেন, “বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে মোট ৮৬২ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়। এরমধ্যে এই বিপুল পরিমাণ বাণিজ্যের মধ্যে বাংলাদেশ ৭৭৫ কোটি ডলারের ঘাটতিতে রয়েছে।”
গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি ৪৫ গুণের মতো বাড়লেও তাতেও ঘাটতি কমাতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রুবানা বলেন, “এখন আমরা ভারতে পণ্য রপ্তানি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। কারণ ভারত আমাদের পণ্য মূল্য হারাচ্ছে। গত চার বছরের মধ্যে দেশটিতে আমাদের পণ্য ১ দশমিক ৬২ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে।”
বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির জন্য ভারতের অশুল্ক বাধাকেও মূল কারণ মনে করছেন অনেক ব্যবসায়ী।
রুবানা বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে ভারতীয় বাজারের শুল্ক-অশুল্ক দুই বাধাই উঠিয়ে দেওয়া উচিৎ।
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক সমন্বয় বিষয়ক পরিচালক সিসিলি ফ্রুম্যান এর সঞ্চালনায় এই ভার্চুয়াল আলেচনায় ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শ্যাম সরনও অংশ নেন।
শ্যাম সরন বলেন, এই অঞ্চলের মধ্যে ভারত সবচেয়ে বেশি উৎপাদন এবং রপ্তানি করে। তাই অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য ভারতকেই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।
“ভারত তার বিশাল উৎপান সরবরাহের জন্য আঞ্চলিকভাবে যদি সাপ্লাই চেইন সৃষ্টি করতে পারে। এতে ভারতই লাভবান হবে। তবে অন্যান্য দেশের উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থা ভারতের বিশাল বাজারে করতে হবে।”
শ্যাম সরন বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে উৎপাদনভিত্তিক সরবরাহ চেইন সৃষ্টি করে বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে এর সুফল অঞ্চলের সব মানুষ পাবে।
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্ট উইগ বলেন, পৃথিবীর যে কোনো আঞ্চলে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমেই দ্রুত উন্নয়ন করেছে। এই অঞ্চলও সহযোগিতার মাধ্যমে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব।
“এই অঞ্চলে সীমান্ত বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে নেপাল, ভারত, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যেও বিদ্যুৎ, জ্বালানি সরবরাহ করে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য সম্ভব।”
তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদাহরণ টেনে বলেন, ১৯৫৮ সালে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ইউরোপের ২৭টি দেশ মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠন করে। ওই আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে ইউরোপ আজ উন্নয়নের শিখরে।