‘মন্দির প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ’ দুর্গাপূজায় ২৬ দফা নির্দেশনা
করোনার প্রভাব পড়েছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজায়। জানা গেছে, থাকছেন না আগের মতো জৌলুশপূর্ণ আয়োজন। মহালয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্বে স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়িভাবে মানা হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বুধবার এ সংক্রান্ত ২৬ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সারা দেশের পূজা উদ্যাপন পরিষদ, মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুষ্ঠান শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভক্ত-পূজারি ও দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা, সবার বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, দর্শনার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, পূজামণ্ডপে নারী-পুরুষের যাতায়াতের আলাদা ব্যবস্থা করা, বেশি সংখ্যক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে।
‘সন্দেহভাজন’ দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা রাখতে হবে। আতশবাজি ও পটকা ফাটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। পূজামণ্ডপে রাখতে হবে সিসি ক্যামেরা।
ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য কোনো গান যেন বাজানো না হয়, মাইক বা পিএ সেট যেন ব্যবহার করা না হয়, পূজামণ্ডপে ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত দীর্ঘ সময়’ কোনো দর্শনার্থী যেন না থাকে এবং সন্ধ্যার বিরতির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশে যেন নিরুৎসাহিত করা হয়- সেসব বিষয়ও আছে নির্দেশনায়।
সব ধরনের আলোকসজ্জা, সাজসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিহার করা, সম্ভব হলে বাসা/বাড়িতে থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভক্তদের অঞ্জলি দেওয়া, খোলা জায়গার অস্থায়ী প্যান্ডেলে স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে চলা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে মণ্ডপকেন্দ্রিক ‘শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি’ গঠন, গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা এবং প্রতিমা নিরঞ্জনে শোভাযাত্রা পরিহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১১ আগস্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব জন্মাষ্টমীও হয়েছে সীমিত পরিসরে। ছিল না কোনো ধরনের শোভাযাত্রা।
গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ১০০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছিল, যার মধ্যে ঢাকা মহানগরে ছিল ২৩৭টি। তবে চলতি বছর করোনা পরিস্থিতিতে কমতে পারে পূজা মণ্ডপ।
এবার মহালয়া হবে ১৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু পঞ্জিকার হিসেবে এবার আশ্বিন মাস ‘মল মাস’, মানে অশুভ মাস। সে কারণে এবার আশ্বিনে দেবীর পূজা হবে না। পূজা হবে কার্তিক মাসে। সেই হিসেবে এবার দেবী দুর্গা ‘মর্ত্যে আসবেন’ মহালয়ার ৩৫ দিন পরে।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে হবে বোধন, দেবীর ঘুম ভাঙানোর বন্দনা পূজা। পরদিন সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আচার অনুষ্ঠান। ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।