ভারতের উপর নজরদারিতে চীনা হেলিকপ্টার
ইস্টার্ন লাখাদের চলমান ইস্যুগুলো নিরসনের প্রয়াসের মধ্যেই চীনা সেনাবাহিনী লাইন অব একচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) মধ্যে তার নিজের এলাকায় সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে বলে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, এলএসির নিজেদের অংশে চীনা চপার কার্যক্রম গত সাত থেকে আট দিন ধরে বেশ বেড়েছে। এর কারণ সম্ভবত, এসব হেলিকপ্টারের সাহায্যে এলএসির বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন চীনা সৈন্যদের কাছে সহযোগিতা প্রদান করা। সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, এসব এলাকায় মোতায়েন চীনা চপারের মধ্যে রয়েছে এমআই-১৭এস ও তাদের স্থানীয় মিডিয়াম-লিফট চপার।
গত কয়েক মাস ধরে চীনারা ইস্টার্ন গালওয়ান এলাসাসহ লাদাখ সেক্টরের ভারতীয় অবস্থানের আশপাশে তাদের চপারগুলো ব্যাপক মাত্রায় উড়াচ্ছে।
গালওয়ান এলাকায় চীনা চপারগুলো এমনকি একবার একটি রাস্তা নির্মাণস্থলের উপর দিয়েও উড়ে যায়।
সূত্র জানায়, চীনারা তাদের চপারের মাধ্যমে প্রায়ই আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে, এলএসিজুড়ে ভারতীয় অবস্থানগুলোর কাছে টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে।
গত মাসের প্রথম দিকে এলএসির খুব কাছে চীনা সামরিক চপার দেখতে পেয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনী তাদের জঙ্গি বিমান নিয়ে আসে ওই এলাকায় টহল দিতে। মে মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতীয় ও চীনা সৈন্যরা যখন মুখোমুখি অবস্থায় ছিল, তখন এই ঘটনা ঘটে।
মে মাস থেকেই চীনা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছৈ। চীনা সেনাবাহিনী এই এলাকায় তাদের ভারী আর্টিলারি ও সাজেয়া যান নিয়ে এসেছে।
উত্তেজনা প্রশমনে উভয় পক্ষ আলোচনা শুরু করেছে। মেজর জেনারেল পর্যায়ের আলোচনার পর পরবর্তী রাউন্ডে লে. জেনারেল পর্যায়ের আলোচনা হবে উভয় পক্ষের মধ্যে।
এএনআই
চীন-ভারত সীমান্ত আলোচনা আরেকটি দোকলাম অচলাবস্থা প্রতিরোধ করেছে
লিউ জুয়ানজুন
চীন ও ভারতের মধ্যকার চলমান সীমান্ত বিরোধ আরেকটি দোকলাম অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না। শনিবার দুই দেশের সামরিক কমান্ডারদের বৈঠকের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসার ব্যাপারে ইতিবাচক মতৈক্য হওয়ায় এই ধারণা হয়েছে। চীনা বিশেষজ্ঞরা সোমবার এ মন্তব্য জানিয়েছেন।
অবশ্য পরিস্থিতির জটিলতার কারণে সামরিক অচলাবস্থা আরো কিছু সময় অব্যাহত থাকতে পারে বলে তারা উল্লেখ করেছেন।
শনিবার লেভিত্তি ভারতীয় বাহিনীর কমান্ডার ও চীনা কমান্ডার বৈঠক করেন। এটি হয় আন্তরিকতা ও ইতিবাচক পরিবেশে। ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতর রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করে।
উভয় পক্ষ দুই দেশের মধ্যে হওয়া বিভিন্ন চুক্তির আলোকে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসায় রাজি হয়। তারা একমত হয় যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ভারত-চীন সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিবস্থা বজায় রাখা প্রয়োজন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারত ও চীন ভারত-চীন সীমান্তজুড়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করে।
গালওয়ান উপত্যকায় চীনা ভূখণ্ডে ভারত অবৈধভাবে প্রতিরক্ষা স্থাপনা নির্মাণ করার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি চীন-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এটি প্রশমনের জন্যই দুই দেশের সিনিয়র সামরিক অফিসারদের মধ্যে আলোচনা হয়।
তাইহি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো ও বেইজিংয়ের সিহুয়া ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক কিয়ান ফেঙ সোমবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সাম্প্রতিক আলোচনায় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে উভয় পক্ষ পরিস্থিতির দিকে খুবই নজর রাখছে, এবং তারা এই উত্তেজনা বাড়তে দিতে রাজি নয়।
তিনি বলেন, এতে বোঝা যায়, চীন ও ভারত সীমান্ত ইস্যু শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে মার্কিন অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রস্তাব উভয় দেশ প্রত্যাখ্যান করার মধ্যে তাদের কৌশলগত বিজ্ঞতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।
মিডিয়ার খবরে বলা হয়, উভয় দেশ সীমান্ত এলাকায় শক্তি বাড়িয়েছে। এতে করে আরেকটি অচলাবস্থার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। অনেকে বলতে থাকেন, দ্বিতীয় দোকলাম সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে।
কিন্তু তা হয়নি। ২০১৭ সালের দোকলাম সঙ্কট থেকে উভয় দেশ বিপুল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছ। এরপর থেকে সামরিক, কূটনৈতিক ও স্থানীয় ইস্যুসহ দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সঙ্কট প্রশমনে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও চলমান অচলাবস্থা খুব শিগগিরই অবসান হচ্ছে না। তিনি বলেন, তবে যে কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, তথা ভারতের চীনা ভূখণ্ডে অবকাঠামো নির্মাণকাজ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে চীন পরিস্থিতি মেনে নেবে না।
গ্লোবাল টাইমস