বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মাণ শুরু
ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণ শুরু হচ্ছে চলতি মাসেই। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই আগামী ১০ জুন শুরু হতে যাচ্ছে বিতর্কিত এই মন্দির নির্মাণের কাজ।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, মন্দির নির্মাণে নরেন্দ্র মোদি ঘোষিত ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথমে শিবের আরাধনা হবে। তারপর শুরু হবে মন্দির নির্মাণের কাজ।
১০ জুন সকাল ৮টা থেকে মহাদেব আরাধনা শুরু হবে শশাঙ্ক শেখর মন্দিরে। টানা ২ ঘণ্টা আরাধনা চলবে। এরপর এদিনই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করবে এলঅ্যান্ডটি সংস্থা। এজন্য এরই মধ্যে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের শহর অযোধ্যায় ১৯৯২ সালে ধ্বংস করা হয়েছিল বাবরি মসজিদ। এ নিয়ে এই অঞ্চলে বহু বছর ধরেই হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিবাদ চলছিল।
বিতর্কিত এই স্থান নিয়ে রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট ও সুন্নি ওয়াকিফ বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। অবশেষে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এ বিতর্কিত জায়গায় রাম মন্দির তৈরির পক্ষেই চূড়ান্ত রায় দেয় ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।
বদলে মুসলিম পক্ষকে মসজিদ তৈরির জন্য অযোধ্যার মধ্যেই ৫ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিমকোর্ট। রায় নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এপ্রিলেই রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু লকডাউনের জেরে পুরো প্রক্রিয়ায় পেছাতে হয়। দিল্লি নির্বাচনের তিন দিন আগে লোকসভায় সেই ট্রাস্ট গঠনের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সরকারপক্ষের এমপিরা সেদিন ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি তুলেছিলেন। গত ২৬ মে মন্দিরের নির্মাণস্থলে যান রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মোহন্ত নৃত্যগোপাল দাস। সেখানে পূজার পর রাম মন্দিরের কাজ শুরুর ঘোষণা দেন তিনি।
বিতর্ক চলাকালীন এতদিন অস্থায়ী একটি টিনের কাঠামোর উপরেই পুজো হতো রামলালার। গত মার্চ মাসে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রামলালার মূর্তি মানস ভবনে স্থানান্তরিত করেন।
ফাইবারের তৈরি এই নতুন অস্থায়ী এ মন্দিরের কাঠামো পুরোপুরি বুলেটপ্রুফ। লকডাউন শিথিল হতেই পুনরায় এই অস্থায়ী মন্দির খুলতে চলেছে বলে খবর। এখন থেকে সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য বিধিনিষেধ মেনেই শুরু হবে রামলালার নিত্য পুজো।
রাম মন্দির নির্মাণের জন্য রাম লালার মূর্তি বিকল্প জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে খোলা থাকবে মন্দির। তার দর্শন এবং পুজো করতে পারবেন ভক্তরা। আট ঘণ্টা খোলা থাকবে মন্দির।
সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। মাত্র ৫ জন করে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। মন্দিরটি হবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী। মোট ১২৫ ফুট উচ্চতার।
যদিও তা বাড়িয়ে ১৬০ ফুট করার প্রস্তাব এসেছে নানা জায়গা থেকে। মন্দিরের প্রথম তলা ১৮ ফুটের। সেখানে থাকবে রাম লালার মূর্তি। দ্বিতীয় তলা হবে ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। এই দ্বিতীয় তল ‘রামের দরবার’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।