অষ্টমবারের মতো দাউদের মৃত্যুর গুজব

0

আবার দাউদ ইব্রাহিমের মৃত্যুর গুজব। এই নিয়ে আটবার। পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়ে থাকা দাউদের করোনায় বা পাকিস্তানি সেনার হাতে মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব রটেছে।

ভারতের কাছে দাউদ ইব্রাহিম হলো ‘মোস্ট ওয়ান্টড টেররিস্ট’। ২৬/১১-র মুম্বই হামলার মূল চক্রান্তকারী এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনকে ধরার জন্য ভারত কম চেষ্টা করেনি। এর আগে সাতবার রটেছিল, দাউদের মৃত্যু হয়েছে। শেষবার রটেছিল ২০১৭ সালে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দাউদ মারা গিয়েছে। তার আগের বছর রটে, গাংগ্রিন হয়ে দাউদের মৃত্যু হয়েছে।

এবার রটেছে দাউদ করোনার শিকার। সংবাদসংস্থা মারফত খবর আসে, দাউদ ও তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত এবং করাচির সেনা হাসপাতালে ভর্তি। দেহরক্ষীদের কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়েছে। তারপরই মৃত্যুর খবর রটতে শুরু করে। দাউদের ভাই আনিস জানিয়েছেন, খবর মিথ্যে। দাউদের করোনাও হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ারও প্রশ্ন নেই।

এর মধ্যে লন্ডনের দ্য সানডে গার্ডিয়ান আবার একটা নতুন তত্ত্ব নিয়ে এসেছে। ভারত ও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনারা দাউদকে বিষ ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরেছে। করাচিতে দাউদের বাড়িতে গিয়ে পাক সেনার চিকিৎসকরা তাকে বিষ ইঞ্জেকশন দেন। তারপর দাউদের একের পর এক অঙ্গ বিকল হতে থাকে। তার মৃত্যু হয়।

সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, দাউদের আত্মীয়দের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুর খবর অস্বাকীর করতে হবে। আনিস যে দাউদের মৃত্যুর খবর অস্বীকার করেছে তা সেই হুমকির ফল। রিপোর্ট বলছে, দাউদকে মারা হয়েছে আমেরিকার চাপে। ভারত নিয়মিত দাউদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ আমেরিকাকে দিয়ে গিয়েছে। যত প্রমাণ হাতে এসেছে, ততই পাকিস্তানের ওপর চাপ বেড়েছে। শুধু আমেরিকা নয়, যুক্তরাজ্যকেও ভারত তথ্য দিয়েছে। তারাও পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছে।

গার্ডিয়ানের রিপোর্ট বলছে, করোনায় নয়, পাকিস্তান সেনার হাতেই দাউদের মৃত্যু হয়েছে। আর যেহেতু পাকিস্তান বরাবর বলে আসছে, দাউদ তাদের দেশে নেই, তাই তারা কখনোই দাউদের মৃত্যুর কথা স্বীকার করবে না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যতবারই সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে, ততবারই চীন ভেটো দিয়েছে। তাই চাপ দিয়ে কাজ হাসিল করার রাস্তায় গিয়েছে আমেরিকা।

চাপটা এইরকম ছিল, পাকিস্তানকে বলা হয়েছিল, দাউদকে ওয়াশিংটনের হাতে দিয়ে দেওয়া হোক। তারপর তারা ভারতের হাতে দাউদকে তুলে দেবে। তবে পাক সেনা দাউদকে মারার রাস্তাই শ্রেয় বলে মনে করেছে বলে সংবাদপত্রটি জানিয়েছে।

গার্ডিয়ানের খবর বলছে, দাউদ আর নেই। কিন্তু সত্যিই কি তাই হয়েছে? এর আগে সাতবার দাউদের মৃত্যু নিয়ে গুজব রটেছিল, যা পরে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। এবারও ভারতে সরকারি স্তরে এ নিয়ে একটা কথাও বলা হয়নি। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কাছে কোনো খবর নেই।

শুধু কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ জানতে চেয়েছে, এই গুজব সত্যি না কি, এটা বিজেপি-র প্রচারের একটা অঙ্গ? মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের মুখপাত্র শচিন সায়ন্তের প্রশ্ন, ”কেন মোদী সরকার এ নিয়ে কোনো কথা বলছে না? দাউদ ভারতের শত্রু। ২০১৪ সাল থেকে দাউদের মৃত্যু নিয়ে প্রচুর গুজব ছড়িয়েছে। এবারও ছড়াল। সরকারকে বলতে হবে, এটা ঠিক না ভুল?”

তার দাবি, ”যখনই মোদী সরকার কোনওরকম বিপদে পড়েন, তখনই দাউদকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়। এবারও কি একই কাণ্ড হয়েছে?” ডয়চে ভেলে

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com