প্রশস্ত মিডিয়া ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন কতটুকু যৌক্তিক ?

0

বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের হাইকোর্ট বলছে, দুর্নীতিবাজকে দুর্নীতিবাজ বলবেন, চোরকে চোর বলতে হবে। যদি এটা না বলা হয় তাহলে দশে রক্ষা করা যাবে না। ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে এক মামলার শুনানিকালে বচিারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি একে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশিন রববিার এ মন্তব্য করেন।(সুত্র : দৈনিক হত্তেফাক) সরকার বলছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলেই আইনি ব্যাবস্থা। দুই দিক থেকে দুই কথা। মাঝখানে সাধারন জনতা। কিন্তুু দুর্নীতিবাজ কারা ? সহসাই বলা যায় দুর্নীতি বরপুত্ররা বা বরকন্যারা সরকারী দলের লোকজনই। বেশী পিছনে না গিয়ে যদি দেখি ক্যাসিনো কেলেংকারী থেকে শুরু করে পাপিয়া পর্যন্ত কিংবা বর্তমান করোনা পরিস্থিতির দিকে তাকালেই দেখা যায় অসীম দুর্নীতির চিত্র। এরা সবাই তো সরকারেরই লোক। সরকারের বাহিরে অন্যকারও দুর্নীতি করার কোন সুয়োগ নেই। দেশের প্রতিটা সেকশনে সরকারী আমলারা ত সরকারেই নিযোগ দেয়া। দলীয় করণ করে তাদের চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে। দেশের বড় বড় মিডিয়াগুলোর কোন ক্ষমতাই নেই সরকার এর সমালোচনা করার। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে দেশের চালচিত্র তুলে ধরার একমাত্র মাধ্যম হলো অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া। যেখান থেকে সবাই সবার মতামত তুলে ধরতে পারে সহজেই। সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সরাকারের এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন গনতন্ত্রের গলা টিপে হত্যা করার আরেকটি নীল নকশা। করোনা মোকাবেলায় নিজেদের নিবেদিত করা বিএনপি নেতাকর্মীদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে দেশের এই দুর্দিনে। গ্রেফতার করা হলো সুনামগঞ্জের সাংবাদিক মাহতাবকে, করােনাভাইরাস নিয়ে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে মামলা। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে। একটি অনিরাপদ স্বৈরাচারী সরকার মহামারীকে ব্যবহার করে গ্রেফতার আর মামলা দেয়া হচ্ছে দেশপ্রেমীদেরকে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে অনেকগুলো ওয়েবসাইড। সরকারের এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অধীনে বাংলাদেশের নতুন গ্রেফতারের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর প্রিন্সিপাল ডেপুটি সহকারী সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর আগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত র্আল মিলার বলেছেন সঠিকভাবে জনস্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়া নির্ভরযোগ্য ও বাস্তবভত্তিকি তথ্য পরবিশেন করতে পারে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ। কোভিড-১৯ মহামারি সময়ে বাক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা এবং সাংবাদিকদের ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশের জনগনের বাকস্বাধীনতা হলো গনতন্ত্রের একমাত্র ভিত্তি। দেশের সার্বিক অবস্থার বিশ্লেষন করবে সাংবাদিক, লেখক, মানবাধিকার কর্মী এবং সাধারন মানুষ। তবে মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াকে। সরকারের এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন কি সেই বাকশালী শাসন ব্যাবস্থার পুনরাবৃত্তি ? যখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো দেশের সব সংবাদ মাধ্যম। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি জাতিসংঘের মানবাধকিার হাই কমিশনার, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশের সাংবাদিক এবং আরো অনেকে সমালোচনা করছেন। কেউই সমর্থন করছেন না সরকারের এই নিধনকারী আইনকে। এটি কালো নকশা মিডিয়া গুলোকে গলা টিপে হত্যা করার। সরকারের প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারের সমালোচনা করার অধিকার সবার রয়েছে। যে যেই অবস্থান বা যে কোন দেশ থেকেই করুক না কেন। সরকারকে সমালোচনা নেবার বা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। বর্তমান বিশ্বের মিডিয়া এখন প্রশস্ত শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ না। যে কোন জায়গা থেকেই সমালোচনা করতে পারবে সমালোচকরা। তাই বলে আইন করে মামলা টুকে দিতে হবে ? এরকম স্বৈরাচারী মনোভাব শীতিল করতে হবে। সরকারের ভুল-ক্রটি, দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরবে তো সাংবাদিক-লেখক, সাধারন জনগণই। তাঁদের মুখ বন্ধ করে সমাধান হবে না। আগে নিজেদের দিকে নজর দিতে হবে। সামাল দিতে হবে নিজের দলের নেতাকর্মীদের। দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে সবাইকে। পরিশেষে বলতে চাই অবিলম্বে এই ডিজিটাল সিকিউরিটি নামের কালো আইন প্রত্যাহার করুন। লেখক: আরিফ মাহফুজ, যুক্তরাজ্য থেকে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com