করোনায় বিপাকে নিম্নবিত্ত, কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের ৭ দফা

0

সারা দেশে করোনা আতঙ্ক। সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়েও ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ। বিশেষত দিনমজুর শ্রেণির মানুষেরা। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশের এই সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ৭ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক মো. মহসিন ভুইয়া এসব দাবি তুলে ধরেন। 

তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা উচিত। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আপদকালীন পারিবারিক ভরণপোষণ ও বিশেষ ভাতা-বীমার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। এটা করা অত্যন্ত জরুরি।’

বিবৃতিতে নেতৃত্রয় বলেন, ‘শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুরসহ দেশের নিম্ন আয়ের মেহনতি মানুষ আজ চরম সংকটের মুখে। তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং সব ধরনের ছাঁটাই-জোরপূর্বক অব্যাহতি ও লে-অফ বন্ধ করে সবেতন ছুটি দেয়া উচিত।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণপরিবহন বন্ধ না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রাম অভিমুখী হয়েছে। যা ব্যাপকভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মুখে দেশকে ঠেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শহরে কিংবা গ্রামে শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষ আজ অনিরাপদ।

জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

১. শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুরসহ মেহনতি মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে উপযুক্ত চিকিৎসা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা উপকরণের সরবরাহ নিশ্চিত করা। উপজেলা পর্যায়ে করোনা সনাক্তকরণ পরীক্ষা ও আইসুলেশন ও ভেন্টিলেশন সুবিধাসহ কার্যকর করোনা ইউনিট চালু করা।

২.অবিলম্বে শহরে ও গ্রামে শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

৩.পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার এনজিও ঋণ ও কৃষি ঋণের কিস্তি উত্তোলন বন্ধে সরকারি আদেশ জারি। শ্রমিক-মজুর ও কৃষকদের অর্থনৈতিক ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে এনজিও ও কৃষি ঋুণ মওকুফ করার ব্যবস্থা করা।

৪.অবিলম্বে বাজেট পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে করোনা মহামারি মোকাবিলায় উপযুক্ত আর্থিক বরাদ্দ প্রদান এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে শ্রমিক-কৃষকসহ নিম্নবিত্ত মানুষের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা।

৫. জরুরি আদেশ জারির মাধ্যমে করোনা মহামারিকালে সব ধরনের ছাঁটাই, টার্মিনেশন, বাধ্যতামূলক অবসর, লে-অফ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কারখানায় শ্রমিকদের বেতন প্রদানসহ ছুটির ব্যবস্থা করা।

৬. নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আপদকালীন পারিবারিক ভরণপোষণ ও বিশেষ ভাতা-বীমার ব্যবস্থা করা। অতি সাধারণ দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক ও খাদ্য নিরাপত্তার যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য জরুরি তহবিল গঠন করা।

৭. তৈরি পোশাক খাতসহ যেসব শিল্প খাতে করোনা মহামারির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেসব খাতের সুরক্ষার বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা এরই মধ্যে ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে পড়েছেন। এ অবস্থায় সরকারের উচিত হবে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে তাদের সহায়তার উদ্যোগ নেয়া।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com