করোনায় মৃত্যুর তথ্য গোপন করলে যা হতে পারে
নভেল করোনা ভাইরাস। চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। সর্বশেষ করোনা ভাইরাস চলে এসেছে বাংলাদেশেও। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে করোনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা বাংলাদেশে সংক্রমণের পর থেকে চলছে ননা তর্ক বিতর্ক। প্রশ্ন রয়েছে হাসিনা সরকার করোনা মোকাবিলায় গত দুই মাসের প্রস্তুতি নিয়েও। শুধু তাই নয় করোনা আক্রান্তে ব্যক্তির সংখ্যার পাশাপাশি সঠিক মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল। এছাড়া আজ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও জ্বর, ছর্দি কাশি নিয়ে সন্দেহজনক মৃত্যু হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এদের করোনায় আক্রান্ত হিসেবে ধরছে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো মৃত্যু সংখ্যা গোপন করে কি লাভ করতে চাইছে ক্ষমতাসীনরা? মৃত্যুর সংখ্যা গোপন করে দেশকে আরও হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি নাতো?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় মৃত্যুুর তথ্য গোপন করে কোনো রোগীকে সাধারণ রোগে মৃত হিসেবে চালিয়ে দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এতে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন ও মৃতের সৎকারে জড়িত লোকজন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং করোনাভাইরাস আরও ব্যাপকভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এছাড়াও যারা লাশ পরিবহন করবে তারা সাধারণ রোগী মনে করে কম সতর্ক থাকবে। যারা লাশ ধোয়ার কাজ করবে তারাও কম সতর্কতা অবলম্বন করবে। এছাড়া দাফন কাফনের কাজ করবে তাদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়বে। যারা মৃতের বাড়িতে যাবে, জানাযায় অংশ নেবে তাদের মধ্যেও রোগ ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
দেখা গেছে, চীনের করোনা সংক্রমণের শুরুতে তারা মৃতের তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরিণতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেয়ায় পরে সতর্ক হয়ে যায়। অবশেষে কঠোর প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।
সচেতন মহল বলছেন, তথ্য গোপন করলে গুজব বৃদ্ধি পায়। চীন তার উদহারণ। দেখা গেছে, চীন প্রথম দিকে গোপন করার চেষ্টা করলে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করে মৃত্যের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এরপর চীনে ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ করোনা ভাইরাসের উপসর্গ গোপন করলে কিংবা ভুল তথ্য দিলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পৃথিবীর শক্তিশালি রাষ্ট্রগুলো করোনা নির্মুল করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেক্ষেত্রে করোনা নির্মুল করতে না পারা বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থতা নয়। তবে শুরু থেকেই সরকারের গাফিলতি রয়েছে। তথ্য গোপন করে নিজেদের সফলতা প্রমাণ করা বোকামি হবে বলে মনে করছেন তারা। তারা বলছেন, গত কয়েক দিনে যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনজন করে আক্রান্তের খবর প্রকাশ করছে তাতে জনমনে তথ্য গোপন করার সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য প্রতিদিন কতজনকে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে, বর্তমান কতজন ঝুকিতে রয়েছে এ তথ্যও গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তারা।