পর্যাপ্ত সময় পাওয়ার পরও কি যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে?
মানুষকে ঘরে রাখার জন্য কি করবে সরকার?
আর মানুষ ঘরে চলে গেলে তার খাবার-চিকিৎসার নিশ্চয়তা আছে?
যারা দেশের মাত্র ৮০ থেকে ৯০ হাজার ডাক্তারের / স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মী নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে পারে নাই, আপনারা আশায় আছে্ন তাঁরা ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা নিয়া চিন্তিত?
এবার আসুন যুক্তি দিয়ে কিছু কথা বলি –
অন্যান্য দেশগুলো করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে চলছে শুধুই ক্যামেরা পোজ। মানুষ উৎকণ্ঠিত অথচ দৃশ্যমান নেই কোনো প্রস্তুতি। সংশ্লিষ্টদের সংবাদ সম্মেলন, টিভিতে বক্তব্য-বিবৃতি এবং আস্ফালন ছাড়া করোনা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি দৃশ্যমান নয়। ডাক্তার, নার্সের প্রস্তুতি টিভিতে দেখানো হলেও বাস্তবে তাদের নিরাপত্তা কিভাবে দেয়া হবে সেটাও চূড়ান্ত করা হয়নি।
করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার দিনই সরকার বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নেয়। তেজগাঁওয়ের প্যারেড স্কয়ারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারতের নরেন্দ্র মোদীসহ বিদেশি অতিথিদের আগমন বাতিল হয়। ঘোষণা দেওয়া হয়, জনসমাগম এড়াতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হবে। অবশ্য ১৭ মার্চ রাতের আতশবাজির কর্মসূচি বহাল থাকে। একই দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটির বৈঠকে জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
চীনের উহানে গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রায় তিন মাস সময় পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি এসে জানা গেল সরকারের হাতে মাত্র দুই হাজারের মতো পরীক্ষার কীট আছে। হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণ ঠেকানোর মতো সরঞ্জাম নেই। এ জন্যে হাঁচি-কাশি ও জ্বরের রোগী এলেই আতঙ্কে পালানোর পথ খুঁজছিলেন চিকিৎসক-নার্সরা। কোথাও কোথাও চিকিৎসক নার্সরা সরঞ্জামের জন্য বিক্ষোভ করছেন। মিটফোর্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তহবিল নেই বলে চিকিৎসক-নার্সদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ সরঞ্জাম কেনার পরামর্শ তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে।
১৭ মার্চ রাত আটটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হাতিরঝিল, সংসদ ভবন এলাকা, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আতশবাজি প্রদর্শনী হয়। এসব কর্মসূচি হাজার হাজার মানুষের জমায়েত দেখা যায়। এ ছাড়া ১৬ মার্চ রাতেই জন্মদিন উপলক্ষে কেককাটাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো। পরদিন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে শত শত মানুষ সমবেত হয়। অর্থাৎ মানুষের জমায়েত বন্ধের পরামর্শ কাজে দেয়নি।