আওয়ামী লীগের মতো করুণ অবস্থা বিএনপির নয়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের অবস্থা এখন খুবই করুণ। আওয়ামী লীগের মতো করুণ অবস্থা বিএনপির নয়। তাদের মত ভীত সন্ত্রস্ত বিএনপি নয়। আওয়ামী লীগ এখন ভোটের ভয়ে আছে। জনগণের প্রতি তাদের আস্থা নেই।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন উপলক্ষে নগরীর কাজীর দেউরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে নগর বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে যে অন্যায় কাজ করাচ্ছে, তাদের সেই ভয়ও আছে। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে। এই যে আওয়ামী লীগের ভয়, সেই ভয়টাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাই ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী করতে নেতাকর্মীদের নির্বাচনের দিন পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে এখন বাংলাদেশে যে ব্যবস্থা চলছে তা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। ২০১০ সালের নির্বাচনের কৌশল ছিল এক রকম। এখন ভিন্ন প্রেক্ষাপট। বেগম খালেদা জিয়া এখন জেলে বন্দী। নেতা কর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা-হামলা, গুম, খুন ও নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। নির্বাচনে জিততে হচ্ছে। একটি আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আমাদেরকে নির্বাচন করতে হচ্ছে। নির্বাচনে সরকার তাদের সুবিধামত পদ্ধতি বানিয়ে নিয়েছে।
আমীর খসরু বলেন, এখন তারা ইবিএম মেশিন নিয়ে এসেছে, যেটা দিয়ে ভোট চুরি করা যায়। নির্বাচনী এলাকার বাহির থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ভয় প্রদর্শন করতে হয়। আর ভিতরে ব্যালট প্যানেলে ভোটাররা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেই আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ভোট দিয়ে দেয়। তবুও ৫ শতাংশ এর উপরে ভোট পাবে না।
তিনি বলেন, চসিক নির্বাচনে আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নির্বাচনী কার্যক্রমে। সবাইকে কেন্দ্রে থাকতে হবে। যেখানে অন্যায় কর্মকাণ্ড হবে সেখানেই প্রতিবাদ করতে হবে। যার যার কেন্দ্রে দায়িত্ব নিয়ে প্রার্থীদের জিতাতে হবে। সিনিয়র নেতারা প্রার্থীদের জিতাতে না পারলে জবাবদিহী করতে হবে। আমাদেরকে সাহসিকতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।
তিনি ‘এজেন্টদের শক্তি না থাকলে কেন্দ্রে থাকার দরকার নাই’নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরাতো যুদ্ধ করতে যায় না। এজেন্টদের কাজ তো মারামারি করা নয়। এই নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার কোন ক্ষমতা নাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ শতভাগ আচরণ বিধি ভঙ্গ করে নির্বাচন করে। আর বিএনপি শতভাগ নির্বাচন বিধি মেনে চলে। চট্টগ্রামে যদি আওয়ামী লীগ কোন আচরণ বিধি ভঙ্গ করে তাহলে আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ নির্বাচন কমিশনের কাছে কোন বিচার নাই।
তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সব দলের জন্য সমান সুযোগ দেবেন। সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার করবেন। যদি আইন প্রয়োগে ভারসাম্য থাকে তাহলে আমরা প্রতিবাদ করবো।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে যতো বাধা আসুক আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকবো। প্রয়োজনে প্রতিবাদ করবো তারপরও নির্বাচনের মাঠ ছাড়বো না। সকল অন্যায় প্রতিহত করে জয় ছিনিয়ে আনবো।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম বলেন, চসিক নির্বাচনে যারা জীবন বাজি রেখে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী করে আনবে, তাদের বিএনপির কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে। জনমত বিএনপির সঙ্গে আছে। তারাই আমাদের শক্তি। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে বিজয় আমাদের হবেই।
নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলমের পরিচালনায় বর্ধিত সভার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন,নগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সহ সভাপতি এম এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, শামসুল আলম, অ্যাভোকেট আবদুস সাত্তার, হাজী মোহম্মদ আলী, সৈয়দ আজম উদ্দিন, জয়নাল আবেদিন জিয়া, নাজিমুর রহমান, আশরাফ চৌধুরী, শফিকুর রহমান স্বপন, সৈয়দ আহমদ, মাহবুবুল আলম, নাজিম উদ্দিন, অ্যাভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া, ইকবাল চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার সারোয়ার, এস এম আবুল ফয়েজ, এম এ হান্নান, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম, এসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহামেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, কাউন্সিলর মো. আবুল হাশেম, মনজুর আলম মনজু, আনোয়ার হোসেন লিপু,গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ সিহাব উদ্দিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম ও প্রচার সম্পাদক সিহাব উদ্দিন মুবিন।