সিলেটের বিভিন্ন সংগঠনের মোদির সফর বাতিলের দাবি
ভারতে মসজিদ-মিনারে অঙ্গিসংযোগ ও মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদে শুক্রবার সিলেটে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। বাদ জুমা নগরীতে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। কোর্ট পয়েন্ট এবং সিটি পয়েন্টে একাধিক সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার উদ্যোগে নগরীর সোবহানীঘাট ডিওয়াই আলীয়া মাদ্রাসা থেকে বিরাট মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সিটি পয়েন্ট, কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার ঘুরে চৌহাট্টায় গিয়ে শেষ হয়।বিক্ষোভকারীরা ভারতে মুসলমান নিপীড়নের নিন্দা জানান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবি জানান।
জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে বাদ জুমআ বন্দরবাজার দলীয় অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিটি পয়েন্টে গিয়ে পথসভায় মিলিত হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জমিয়তের নেতাকর্মী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরো বিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।
বক্তারা বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। এ দেশে মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। তারা বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ লুৎফুর রহমানের পরিচালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মহানগর জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ হাফিজ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা খয়রুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সালিম ক্বাসেমী, মহানগর জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আখতারুজ্জামান তালুকদার, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, হাফিজ কবির আহমদ প্রমুখ।