মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না: আহমদ শফী
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ‘মুজিববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মির, দিল্লীসহ অনেক রাজ্যে মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনো মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক!’
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ‘মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের ওপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে তা পরিস্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতায় ২০ জনের অধিক মুসলমান নিহত হয়েছে। মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। খোঁজে খোঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করা হয়েছে। এরপরও মুসলমান প্রচণ্ড ধৈর্যধারণ করছে। তবে একথা ভুলে গেলে চলবে না, মুসলমান ধৈর্যশীল তবে ভীরু নয়। মুসলমানগণ প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোদির মসনদ তছনছ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে। ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরোবিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থি হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।’
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ‘কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবি করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হবার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মিরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের জেনে রাখা উচিত জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।’
আমীরে হেফাজত বলেন, ‘ইসলাম সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে। শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুরোধ করছি- ভারতীয় মুসলমানদের জান মাল ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধে কার্যকরি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করুন। সব দেশে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিতকরণ, জানমালের নিরাপত্তায় একতাবদ্ধ হওয়া আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। কারণ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এক ও অভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ।’